ফাইল চিত্র।
দীর্ঘদিন আগে শিল্প গড়তে চেয়ে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) কাছ থেকে অনেকেই স্বল্প মূল্যে জমি নিয়েছিলেন। কিন্তু এডিডিএ-র পর্যবেক্ষণ, শিল্প তৈরি হয়নি অনেক ক্ষেত্রেই। অনেকে আবার বাড়ি তৈরির কথা বলে জমি নিয়েও তা করেননি। ২০০৫-এর আগে পর্যন্ত যাঁরা এমন জমি নিয়েছিলেন, তা অবিলম্বে ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে মালিকদের কাছে ‘নোটিস’ পাঠিয়েছে এডিডিএ।
এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, অব্যবহৃত জমি ফেরত নেওয়ার সিদ্ধান্ত কয়েক মাস আগেই বোর্ড মিটিংয়ে নেওয়া হয়েছিল। সম্প্রতি রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের সবুজ সঙ্কেত পাওয়ার পরে, মোট ৯৫ জনকে জমি ফেরত দেওয়ার নোটিস পাঠানো হয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে তাঁদের জমি কেন ফেরত নেওয়া হবে না, তা জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নোটিসে। তবে এডিডিএ-র চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “জমি ফেরত নেওয়া হবেই। শিল্প বা বাড়ি নির্মাণের জন্য নির্দিষ্ট সময় উল্লেখ করেই জমি বরাদ্দ করা হয়। তাই যদি ‘প্ল্যান’ অনুমোদন হয়ে গিয়ে থাকে, অথচ, জমি পড়ে রয়েছে বলে দেখা যায়, তেমন জমিও ফেরত নেওয়া হবে। নোটিসের জবাবপাওয়ার পরেই জমি ফেরত নেওয়ার বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়াশুরু করবে এডিডিএ।”
কিন্তু কেন জমি অব্যবহৃত থেকে গিয়েছে? নোটিস পাওয়া, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জমির মালিক বলেন, “পাইপের কারখানা গড়ব বলে তিন জন মিলে একটা জমি নিয়েছিলাম। পরে, দু’জন অংশীদারি ছেড়ে চলে যান। মালিকানা সংক্রান্ত বিবাদ এখনও মেটেনি। তার পরে আর এগোতে পারিনি।’’ অন্য এক জন বলেন, “তখন জমির চাহিদা কম ছিল। পেয়ে গিয়েছিলাম। ভবিষ্যতে, কিছু একটা করব ভেবেছিলাম। কিন্তু তা আরহয়ে ওঠেনি।”
ঘটনাচক্রে, গত জানুয়ারিতে দুর্গাপুরে জেলা শিল্পকেন্দ্রের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে ‘আসানসোল চেম্বার অফ কমার্স’ অভিযোগ করে, আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন শিল্পতালুকে বেশ কিছু শিল্পোদ্যোগী জমি নিয়েছিলেন বহু বছর আগে। কিন্তু তাঁরা শিল্প না করে জমি ফেলে রেখেছেন। কেউ-কেউ সেই জমি আবার ভাড়ায় অন্যকে দিয়ে দিয়েছেন। অথচ, নতুন শিল্পোদ্যোগীরা আবেদন করেও, প্রয়োজনীয় জমি পাচ্ছেন না।
দুর্গাপুরের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগীদের সংগঠন ‘দুর্গাপুর স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ় অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি সুব্রত লাহা বলেন, “করোনা-পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠে অনেকেই শিল্প গড়তে আসছেন বা সম্প্রসারণ করতে চাইছেন। জমির চাহিদা বাড়ছে। সে ক্ষেত্রে অব্যবহৃত জমি ফিরিয়ে নিয়ে যদি তাঁদের দেওয়া হয়, তা হলে ভাল হয়।” তিনি জানান, কেন্দ্র ও রাজ্য, দুই সরকারই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশের উদ্যোগী হয়েছে। তাই জমির নিলাম-প্রক্রিয়া শুধু ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখার প্রস্তাব এডিডিএ-র কাছে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।