বিজেপি নেতা সুভাষ সরকার কথা বলছেন মৃতার পরিবারের সঙ্গে। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।
ঘটনার পরে দু’দিন পেরিয়ে গেলেও বর্ধমানের অগ্রদ্বীপে বিরাশি বছরের বৃদ্ধাকে নির্যাতন ও খুনের ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। কে বা কারা এর সঙ্গে জড়িত, বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত সে ব্যাপারেও অন্ধকারে তারা। গ্রামে গিয়ে এ দিন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিজেপি-র রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষ সরকার। প্রয়োজনে হাইকোর্টে যাওয়ারও হুমকি দিলেন তিনি।
কাটোয়ার অগ্রদ্বীপে গোপীনাথ মেলা উপলক্ষে প্রতি বছরের মতোই সোমবার থেকে ওই বৃদ্ধার বাড়িতে আখড়া বসেছিল। বুধবার সকালে বাড়ির শৌচাগারের কাছে বৃদ্ধার বিবস্ত্র ও ক্ষতবিক্ষত দেহ মেলে। পরিবারের অভিযোগ, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে তাঁকে। নদিয়ার চাপড়া থেকে আসা আখড়ার দলটির অনেকে সে দিন সকালেই উধাও হয়ে যান। সন্দেহ তাদের উপরে গিয়ে পড়ায় ওই দলের বাকি সাত জনকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন গ্রামবাসীরা। যদিও পুলিশ সূত্রের খবর, তাঁদের বারবার জেরা করেও বিশেষ কোনও সূত্র মেলেনি। পুলিশের দাবি, জেরায় তাঁরা জানিয়েছেন, বাউল গান, সংকীর্তন শুনতে রাতভর মেলায় ঘুরছিলেন তাঁরা। তাই কী ঘটেছে জানেন না।
কাটোয়া হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বৃদ্ধাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল কি না জানতে দেহরস পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। তবে বর্ধমানের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বুধবার রাতে বলেছিলেন, “প্রাথমিক ভাবে পাওয়া মেডিক্যাল রিপোর্ট অনুযায়ী, ধর্ষণ করা হয়েছে এমন চিহ্ন মেলেনি।” পুলিশ সুপারের এই মন্তব্য নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। এ দিন বৃদ্ধার পরিবারের সঙ্গে দেখা করে বিজেপি-র রাজ্য সহ-সভাপতি সুভাষবাবু বলেন, “মৃতদেহের নানা দিক থেকে তোলা ছবি দেখে এক জন চিকিৎসক হিসেবে বলতে পারি, নির্যাতনের পরেই বৃদ্ধাকে খুন করা হয়েছে। পুলিশ যা দাবি করছে, তাকে আমরা চ্যালেঞ্জ করছি। পুলিশ কী করছে কয়েক দিন দেখার পরে আমরা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হব। পুরো ঘটনা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকেও রিপোর্ট করব।”
প্রতিনিধি দল নিয়ে গ্রামে গিয়ে সিপিএমের বর্ধমান জেলা কমটির সদস্য অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ও দাবি করেন, “পুলিশ দলদাসে পরিণত হয়েছে বলেই এই সব ঘটনা ঘটছে।” নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উড়িয়ে পুলিশ সুপারের অবশ্য আশ্বাস, “শীঘ্রই ঘটনার কিনারা করা হবে।”