(বাঁ দিকে) অভিযুক্ত গোপাল দাস এবং পূর্বস্থলী উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
বালির লরি এলাকায় ঢুকলেই টাকা দিতে হয় পূর্বস্থলী থানার আইসি (ইনস্পেক্টর ইন চার্জ)-র গাড়িচালককে! হোটেলে বসেই টাকা তোলার কাজ করেন তিনি! এমন অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল। খবর পেয়ে হোটেলে পৌঁছে অভিযুক্তকে ধরলেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক। পরে ওই গাড়িচালককে পুলিশের হাতে তুলে দেন তিনি। তাঁকে আটক করেছে পূর্বস্থলী থানার পুলিশ।
অভিযোগ, পূর্বস্থলী এলাকায় বালির লরি নিয়ে ঢুকতে গেলে আগে জানাতে হত থানার আইসির গাড়িচালক গোপাল দাসকে। তিনিই ঠিক করতেন, কোন লরি থেকে কত টাকা নেওয়া হবে। কোনও লরি থেকে দেড় হাজার টাকা, তো কোনওটা থেকে দু’হাজার নিতেন তিনি। নিজের পরিচয় দিতেন পূর্বস্থলী থানার ‘ডাক মাস্টার’ বলে! একটি হোটেলে বসে তিনি এই কাজ করতেন বলেও অভিযোগ। এ সব কথা জানতে পেরে স্থানীয় ওই হোটেলে যান পূর্বস্থলী উত্তরের তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়। সেখান থেকে গোপালকে পুলিশের হাতে তুলে দেন তিনি।
পরে বিধায়ক জানান, তাঁর কাছে কয়েক জন অভিযোগ করেছিলেন, পূর্বস্থলী থানার আইসির গাড়িচালক একটি হোটেলে বসে টাকা তুলছেন। সেই অভিযোগ পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে ওই হোটেলে যান তিনি। তার পরেই অভিযুক্তকে পুলিশ ডেকে ধরিয়ে দেন তপন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি কাল রাতে খবর পাই। আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি।’’ এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই হোটেলে মধুচক্রও চলে। ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করা হয় সেখানে। তবে সেই ঘটনার সঙ্গে গোপালের কোনও যোগ রয়েছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
স্থানীয় বাসিন্দা সহদেব মাহাতো বলেন, ‘‘আমরা এলাকার বাসিন্দারা তিতিবিরক্ত। গোপাল বালির গাড়ি থেকে টাকা তুলত। রাতে ডাম্পার থেকেও টাকা নিত।’’ তাঁর অভিযোগ, ওই হোটেলে প্রায়ই মহিলা নিয়ে আসতেন গোপাল। সেখানেই ফুুর্তি করতেন। সহদেবের কথায়, ‘‘আমরা গরিব মানুষ। হোটেলের লোকেরা আমাদের ভয় দেখাত। ভয়ে এত দিন কিছু বলতে পারিনি। তবে বুধবার রাতে থানায় অভিযোগ জানিয়েছি।’’
এ প্রসঙ্গে পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার আমনদীপ জানিয়েছেন, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।