Education

মাধ্যমিক পড়ুয়াদের বাড়িতে হাজির ‘স্যর’

গত এক মাস ধরে সেই পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পাঠদান করছেন কাটোয়ার এক শিক্ষক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাটোয়া শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০২০ ০০:০১
Share:

পড়াচ্ছেন টোটনবাবু। নিজস্ব চিত্র

‘লকডাউন’-এ দীর্ঘ দিন ধরেই স্কুল বন্ধ। করোনা সংক্রমণের আশঙ্কায় পড়াচ্ছেন না অনেক গৃহশিক্ষকও। আবার অনলাইনে পড়াশোনা শেখার সুযোগ নেই অনেক পড়ুয়ার। ফলে মুশকিলে পড়েছেন গরিব, প্রত্যন্ত এলাকার বহু ছাত্রছাত্রী, বিশেষত মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। গত এক মাস ধরে সেই পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পাঠদান করছেন কাটোয়ার এক শিক্ষক।

Advertisement

কাশীরামদাস বিদ্যায়তনের (কেডি স্কুল) ভূগোলের টোটন মল্লিক নামে ওই শিক্ষক প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে এক একটি বাড়িতে যাচ্ছেন। হাতে স্যানিটাইজার দিয়ে মুখ আঢাকা দেখলেই মাস্ক পরিয়ে দিচ্ছেন ছাত্রদের। পড়ানোর সঙ্গে বাড়ির কাজ দিচ্ছেন। আবার পরের দিন গিয়ে দেখছেন সেই পড়া।

টোটনবাবু জানান, কাটোয়া শহরের ফরিদপুর কলোনি, পাবনা কলোনি, অজয়পল্লি, সর্দারপাড়া, হাজারাপুর কলোনি এলাকায় বেশির ভাগ গরিব মানুষের বসবাস। সেখানকার অনেকেই কেডি স্কুলে পড়ে। কাটোয়া শহর লাগোয়া অজয় নদীর ও পার কেতুগ্রামের বেগুনকোলা গ্রাম থেকেও বেশ কিছু দরিদ্র পরিবারের ছাত্র নদ পেরিয়ে এই স্কুলে পড়তে আসে। কিন্ত, করোনা পরিস্থিতিতে যাঁদের স্মার্টফোন আছে তাঁরা অনলাইনে ক্লাস করলেও গরিব পড়ুয়ারা সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত। এর প্রভাব পড়ছে পড়ুয়াদের মনেও। মূলত সেই সব বাড়িতেই যাচ্ছেন টোটনবাবু।

Advertisement

অজয়পল্লির কৃষ্ণ দাস, সুরজিৎ মণ্ডলরা বলে, ‘‘বাড়িতে অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল না থাকায় অনলাইনে পড়াশোনার সুযোগ নেই। এ দিকে সামনের বছর মাধ্যমিক দেব। কী ভাবে পড়ব বুঝতে পারছিলাম না। হঠাৎ এক দিন সকালে টোটন স্যর বাড়িতে এলেন। সপ্তাহে এক-দু’দিন স্যর আসায় ভুগোল পড়া অনেকটা এগিয়েছে।’’ বেগুনকোলা গ্রামের সোমনাথ থাণ্ডার, গৌরব মণ্ডলেরাও বলে, “করোনার জন্য নদী পেরিয়ে যাওয়ার উপায় নেই। স্যর এতটা এসে পড়াবেন ভাবতে পারানি।’’

টোটনবাবু বলেন, ‘‘স্কুলের প্রধান শিক্ষকের অনুমতি নিয়ে পালা করে দশম শ্রেণির ছাত্রদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পড়াচ্ছি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ কাজ চালিয়ে যাব।’’

ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক কমলকান্তি দাস বলেন, “ওই শিক্ষকের ব্যক্তিগত উদ্যোগটি খুবই প্রশংসনীয়। এতে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা খুবই উপকৃত হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement