উপকৃত: মঙ্গলকোটের এই জমিই দান করা হয়েছে। নিজস্ব চিত্র
ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার আবহে নজির রেখেছিল মালদহের মানিকচক। হিন্দু যুবকের চিকিৎসার খরচ জোগাতে এবং তাঁর শেষযাত্রায় কাঁধ দিতে দেখা গিয়েছিল পড়শি মুসলিমদের। প্রয়োজনে জাত-ধর্মের উপরে উঠে এগিয়ে আসার ছবি এ বার দেখল পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোট। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই ব্লকে গোরস্থান গড়তে চল্লিশ শতক (প্রায় এক বিঘা) জমি দান করল হিন্দু পরিবার।
মঙ্গলকোটের গোতিষ্ঠা গ্রামে ৩টি কবরস্থান। তার মধ্যে দক্ষিণপাড়ায় ১২০টি মুসলিম পরিবারের বাস হলেও কবরস্থানটি খুবই ছোট। ফলে গোরের জায়গা নিয়ে চিন্তা ছিলই। পড়শিদের সমস্যার কথা জেনে এগিয়ে আসেন স্থানীয় বাসিন্দা বীরেশচন্দ্র দেব। জমির মালিক, দুই ভাই সুদেব চক্রবর্তী ও সুশীল চক্রবর্তীর অনুমতি নিয়ে গোরস্থান লাগোয়া পড়ে থাকা এক খণ্ড জমি দানের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। বীরেশবাবুর ছেলে বিজনবাবু জানান, সম্প্রতি তাঁর বাবার নামে ‘পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি’ দিয়ে যান বৃদ্ধ সুদেব ও সুশীলবাবু। তার ভিত্তিতেই বীরেশবাবু জমিটি হস্তান্তর করেন মসজিদ কমিটিকে। মসজিদ কমিটি তরফে আবু তৈয়ব শেখ, পিয়ার শেখরা বলছেন, ‘‘পড়শি মানুষজনের উপকার করতেই ওঁরা জমিটি দান করেছেন। ওঁদের ভাল হোক।’’
সূত্রের খবর, পুরনো কবরস্থানে জায়গা প্রায় ভরে এসেছিল। পাশেই প্রায় এক বিঘে জমি মেলায় উপকারই হয়েছে স্থানীয়দের। বীরেশবাবু ও তাঁর ছেলে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকার কাছাকাছি দামের জমিটি দিয়ে দিয়েছেন। বীরেশবাবু বলেন, ‘‘চেয়েছিলাম জমিটা কাজে আসুক। সেই মতো আসল মালিকদের জানিয়েছিলাম। ওঁরাই আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে বলেন।’’ জমিটি মসজিদ কমিটির তরফে মাঝেসাঝে সংস্কার করা হতো বলেও জানা গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইতিমধ্যে একশো দিনের প্রকল্পে জমি সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। মঙ্গলকোটের বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী বলেন, ‘‘এমন উদ্যোগ আরও চাই। দু’তরফকেই একে অপরের উপকারে এগিয়ে আসতে হবে।’’