আদালতে নিয়ে আসা হচ্ছে ধৃত সৌভিক বণিককে। বুধবার জঙ্গিপুরে। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়
দফায় দফায় তাঁকে জেরা করেছে পুলিশ। আর্থিক লেনদেনের কথা কবুল করলেও বার বারই সে দাবি করেছে, খুনের সঙ্গে সে জড়িত নয়। মঙ্গলবার রাতে সেই আর্থিক প্রতারণার অভিযোগেই পুলিশ বীরভূমের রামপুরহাটের বাসিন্দা সৌভিক বণিককে গ্রেফতার করেছে। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার বলেন, ‘‘সৌভিককে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রতারণা চক্রে আরও কিছু লোক জড়িয়ে আছে বলে মনে হচ্ছে। তদন্ত করে বাকিদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
পুলিশ জানিয়েছে, বহু আগে থেকেই বিভিন্ন অর্থলগ্নি সংস্থায় কাজে হাত পাকিয়েছিল সৌভিক। ২০০৪ সাল থেকে জিয়াগঞ্জের নিহত শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল সৌভিকের সঙ্গে একাধিক অর্থলগ্নি সংস্থায় কাজ শুরু করেন। পুলিশ সুপার মুকেশ কুমারের দাবি, ‘‘সৌভিকের সঙ্গে বন্ধুপ্রকাশ লোকজনের কাছে লগ্নি করার নাম করে অর্থ তুলেছে। অনেকের টাকা সংস্থায় জমা পড়েনি বলেও প্রতারণার অভিযোগ পেয়েছি।’’
বন্ধুপ্রকাশ পালের মামাতো ভাই সুজয় ঘোষের অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে সাগরদিঘি থানার পুলিশ সৌভিককে গ্রেফতার করে। গত ১৫ অক্টোবর সুজয় সাগরদিঘি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
ওই অভিযোগে বলা হয়েছে, সুজয় তাঁর মা রূপালী ঘোষের পলিসি করতে ২০১০ সাল থেকে ২০১৯ সালের এপ্রিল মাস পর্যন্ত দফায় দফায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা দিয়েছিলেন সৌভিককে। কিন্তু সৌভিক পুরো টাকাটাই আত্মসাৎ করে। অভিযোগ, সৌভিক লগ্নি সংস্থার পলিসির যে রসিদ দিয়েছিল
সেটিও নকল। সুজয় বলেন, ‘‘সৌভিক বন্ধুপ্রকাশের পরিচিত। তাই পলিসির টাকা মার যাবে না ভেবেই ওকে টাকা দিই। কিন্তু পরে জানতে পারি টাকাও ওই সংস্থায় জমা পড়েনি। এবং যে রসিদটি দিয়েছিল সেটিও জাল।’’
পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার পরে সৌভিকের বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গ, প্রতারণা, নথিপত্র জাল করা ও ষড়যন্ত্রের মামলা রুজু করেছে। সুজয়ের দাবি, ‘‘বন্ধুপ্রকাশকে বিশ্বাস করেই অনেকে টাকা লগ্নি করেছিলেন। পরে দাদার মুখ চেয়েই সৌভিককে সে ভাবে কেউ কিছু বলেননি।’’