তাপস-কুন্তলের জামিনের আর্জি খারিজ করল আদালত। ফাইল চিত্র।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডের তিন অভিযুক্ত তাপস মণ্ডল, কুন্তল ঘোষ এবং নীলাদ্রি ঘোষকে বৃহস্পতিবার আবারও আলিপুর আদালতে পেশ করা হয়েছিল। অভিযুক্তদের আইনজীবীরা আদালতে জামিনের আর্জি জানালেও বিচারক তাঁদের ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
আদালতে কুন্তলের আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেলকে সিবিআই ৩ বার ডেকেছিল। প্রতি বারই তিনি সিবিআইয়ের ডাকে সাড়া দিয়ে তদন্তে সহযোগিতা করেছিলেন বলে দাবি করেন কুন্তলের আইনজীবী। কুন্তলের বিরুদ্ধে যে উত্তরপত্র (ওএমআর) বিকৃতির অভিযোগ উঠেছে, তা খণ্ডন করে তিনি আদালতকে জানান, তাঁর মক্কেলের কাছ থেকে কিছু কাগজ ছাড়া আর কিছু পাননি ইডির তদন্তকারীরা। কুন্তল প্রভাবশালী নন, আরও এক বার এমনটা দাবি করে জামিনের আর্জি জানান তাঁর আইনজীবী।
বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক কিছু দিন আগেই মামলার গতিপ্রকৃতি নিয়ে উষ্মাপ্রকাশ করে সিবিআইয়ের উদ্দেশে বলেছিলেন, “আপনারা পনির মসালা রাঁধছেন পনির ছাড়াই।” বৃহস্পতিবার আদালতে সওয়াল-জবাব প্রসঙ্গে উঠে এসেছে সেই প্রসঙ্গও। কুন্তলের আইনজীবী দাবি করেন, “এই মামলায় পনির দূরে থাক আগুনটাই নেই।’’ পাল্টা সিবিআইয়ের কৌঁসুলি দাবি করেন, বিভিন্ন ধরনের পনির আছে এই মামলায়। পনির বলতে এখানে বিভিন্ন নিয়োগ দুর্নীতিতে যুক্ত প্রভাবশালীদেরই তিনি ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। সিবিআইয়ের আইনজীবী এ-ও জানান যে কুন্তলকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করে বেশ কিছু প্রভাবশালীর নাম পাওয়া গিয়েছে। কুন্তলদের জামিনের আর্জির বিরোধিতা করে তিনি জানান, অভিযুক্তদের ছেড়ে দেওয়া হলে, তাঁরা তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারেন।
তাপসের আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেলকে মাত্র এক ঘণ্টা জেরা করেছেন তদন্তকারীরা। তা ছাড়া তাপস অসুস্থ বলেও দাবি করেন তিনি। তাপসের জামিনের আর্জি জানানো হয় আদালতে। আর এক অভিযুক্ত নীলাদ্রির আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেলকে তাপস এবং কুন্তলের মধ্যে সংযোগ রক্ষার কাজ করে যাওয়া ‘মিডলম্যান’ হিসাবে বর্ণনা করেছে সিবিআই। কিন্তু অভিযুক্তদের কেউ সরকারি কর্মচারী না হওয়া সত্ত্বেও কেন তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি বিরোধী আইন প্রয়োগ করা হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। সিবিআইয়ের আইনজীবী এই প্রসঙ্গে জানান, বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের তদন্ত ক্রমশ গুটিয়ে আনা হচ্ছে। তাই এই ধারা দেওয়া হয়েছে।