ভোর ছ’টায় চা-বিস্কুট, ন’টায় লুচি-আলুর তরকারি-আচার। দুপুরে ভাত-রুটি-পনির-মুরগির মাংস-স্যালাড। বিকেলে আবার চা।
বৃহস্পতিবার এমনভাবেই দিনভর রান্নাবান্না করে খেয়ে ধর্মঘটের দিন বাগডোগরা সচল রাখলেন বিমানবন্দরের কর্মী অফিসারেরা। যাত্রীদের জন্যও সকাল থেকেই খোলা ছিল বিমানবন্দরের রেস্তোরাঁ। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের নজর ছিল, খাবারের অভাব যেন না ঘটে, বাচ্চাদের জন্য দুধের জোগানও যেন যথেষ্টই থাকে। যাত্রীরাও এই ব্যবস্থায় খুশি। মুম্বই থেকে কলকাতা ঘুরে সকাল সাড়ে এগারোটায় ক্লিফোর্ড আলমিরা পরিবার নিয়ে বাগডোগরা পৌঁছন। তাঁর কথায়, ‘‘দশটা সাধারণ দিনের মতোই সব কিছু দেখলাম। কোনও অসুবিধা হয়নি।’’
সাধারণ দিনে গড়ে ১২০০ যাত্রী যাতায়াত করেন বাগডোগরা দিয়ে। তাঁদের মধ্যে গড়ে ৫০০ জন সেখানকার রেস্তোরাঁয় খান। কিন্তু, এ দিনের পরিস্থিতি যে ভিন্ন হতে চলেছে, তা আগে থেকে আঁচ করতে পারেন বাগডোগরা বিমানবন্দর অধিকর্তা রাকেশ সহায়। বুধবারেই বলে দেওয়া হয়েছিল, খাবার বানাতে হবে ১২০০ যাত্রীর কথা ভেবেই। সহায় বলেন, তাঁদের প্রধান কাজ ছিল বিমানবন্দরে যাত্রী পরিষেবা স্বাভাবিক রাখা। সবার সহযোগিতায় তা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘কিন্তু ধর্মঘট হলে যাত্রী ও কর্মীরা সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি খাবার নিয়ে সমস্যায় পড়তেন বলে শুনেছিলাম। তাই এবার আগেই কর্মীদের বলে রেখেছিলাম, নিজেরাই আয়োজন কর। সকাল থেকে রাত অবধি এখানেই থাক, কাজ কর আর খাওয়া দাওয়া কর। রেস্তোরাঁকে বলেছিলাম, পর্যাপ্ত খাবার রাখতে।’’
বিমানবন্দরটি বাগডোগরার মূল প্রাণকেন্দ্র বিহার মোড় থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে। বিমানবন্দরের আশেপাশে মূলত চা বাগান, বায়ুসেনা এবং সেনা বাহিনীর এলাকা। তেমন দোকানপাটও নেই। কর্মীদের কথায়, ‘‘এর আগেও ধর্মঘটে ভোরে দফতরে আসতে হয়েছে। প্রতিবারেই খাবার নিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়েছে।’’ তাই দফায় দফায় আলোচনা শুরু হয়েছিল বুধবার থেকেই। শেষে অধিকর্তার উদ্যোগেই রান্নার ব্যবস্থা হয়।