পুণ্ডিবাড়িতে তৃণমূলের সভায় বক্তব্য রাখছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। ছবি: হিমাংশুরঞ্জন দেব
পরপর তালাবন্ধ ঘর। প্রতিটি ঘরের ওপরে কাগজ সাঁটা। কোনওটায় ‘স্বাস্থ্য দফতর’, কোনওটায় ‘পরিবহণ কর্তৃপক্ষ’। নীচতলায় ঘরগুলির মধ্যে খোলা রয়েছে দু’টি। গাদাগাদি করে টেবিল চেয়ার পেতে চলছে সমবায় দফতরের কাজ। কোনও ঘরই স্থায়ী নয়। উত্তরকন্যার অফিস এনক্লেভের নীচতলার দশা এমনই।
ছ’মাস হল উত্তরকন্যায় এসেও এখনও অস্থায়ী ঘরেই অফিস চলছে সমবায়ের। বর্ষার সময়ে মেঝেতে জল জমে যায়। জল এবং নিকাশির পাইপ চুঁইয়ে ছাদ দিয়েও জল পড়ে বলে অভিযোগ। সে কারণেই ঘর বরাদ্দ হলেও এখনও তালাবন্ধ। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরই উত্তরকন্যার দেখভাল করে। বেশ কিছু দফতরের তরফে তাদের ক্ষোভের কথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরকে জানানোও হয়েছে। দফতরের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘ওই ভবনের ওপরের দু’তলাতেই অফিস রয়েছে। নীচতলা মূলত খাবারের জায়গার জন্য রাখা হয়েছিল। কি ভাবে সুষ্ঠু বিন্যাস করা যায় তা খতিয়ে দেখব।’’
নানা দফতরের কর্মীরা জানাচ্ছেন, মূল ভবনে পাওয়া গিয়েছে একটি বা ছোট দু’টি ঘর। তাতে অফিসাররা বসবেন নাকি কর্মীরা, তা স্থির করতেই জেরবার দশা হয় বলে দাবি করলেন শ্রম দফতরের এক আধিকারিক। এই সমস্যা মেটাতেই মূল ভবনের পাশে তৈরি হয়েছে সংযোজিত ভবন তথা অফিস এনক্লেভ। সেখানেই এই দশা।
গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে পরিবহণ দফতর তাদের দফতর শিলিগুড়ির শহর থেকে উত্তরকন্যার ওই ভবনের নীচতলার ঘরে এসেছিল। কিন্তু নীচতলার দশা দেখে কয়েক মাস থেকেও পুরো অফিস ফের শহরের তেনজিং নোরগে ভবনেই সরিয়ে নিয়ে গিয়েছে পরিবহণ দফতর।
পরিবহণ দফতর সূত্রে সরকারি ভাবে অবশ্য ভোগান্তির কথা স্বীকার করা হয়নি। কর্তাদের তরফে দাবি করা হয়েছে, উত্তরকন্যা সাধারণ বাসিন্দাদের কাছে দূর হয়ে যাচ্ছিল। সে কারণেই ফের অফিস স্থানান্তর হয়েছে। যদিও দফতরের এক কর্মীর কথায়, ‘‘ওখানে বসার জায়গা নেই। বৃষ্টিতে জলে পায়ের পাতা ডুবে গিয়েছিল। বেশিদিন থাকতে পারিনি।’’
তবে থেকে গিয়েছে সমবায় দফতর। তাদের এখন উভয়সঙ্কট অবস্থা। উত্তরকন্যায় ঘর বরাদ্দ হওয়ার পরে শিলিগুড়ির হাকিমপাড়ার বাড়া বাড়ি ছেড়ে চলে আসে দফতর। উত্তরকন্যায় দু’টি মাত্র ঘর বরাদ্দ হয়, তাতে পুরো অফিস চালানো সম্ভব নয়। সঙ্গে জল জমার সমস্যা। ঘরের দেওয়ালে এখনও স্পষ্ট জলের দাগ। এখনও স্থায়ী বন্দোবস্ত হয়নি তাদের। এক কর্মীর কথায়, ‘‘ছ’মাস ধরে এ ঘর আর অন্য ঘর করে যাচ্ছি। এমন জানলে ভাড়া বাড়ি ছাড়তাম না। আমাদের তো দু’কূলই গেল।’’