চায়ে পে চর্চা। মন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম কলকাতায় এলেন বাবুল সুপ্রিয়। শহরের বিজেপি কার্যালয়ের সামনে একটি চায়ের দোকানে চা-বিস্কুট খেলেন। হাত মেলালেন দোকানির সঙ্গেও। ছবি: সুমন বল্লভ।
কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর প্রথম কলকাতায় এসেই বাবুল সুপ্রিয় জানালেন, জমির ঊর্ধ্বসীমা আইন ও সম্পত্তি কর তুলে দেওয়ার সুযোগ ও সম্ভাবনা তিনি খতিয়ে দেখবেন।
আসানসোল থেকে নির্বাচিত এই সঙ্গীতশিল্পী টিম মোদীর অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার প্রথম বিজেপির রাজ্য দফতরে এলেন এবং সংবর্ধনা পেলেন। রাজ্য সরকারের নিয়মিত অভিযোগ, জওহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আরবান রিনিউয়াল মিশন (জেএনএনইউআরএম)-এ তাদের প্রাপ্য অর্থ থেকে কেন্দ্র বঞ্চিত করছে। কেন্দ্রের যুক্তি, ওই অর্থ পেতে যে শর্ত মানতে হয়, তা রাজ্য মানছে না। যেমন, জমির ঊর্ধ্বসীমা আইন এবং সম্পত্তি কর তুলে দেওয়া। অন্য সব রাজ্য মানলেও পশ্চিমবঙ্গ মানছে না।
এ দিন সংবর্ধনার অবসরে বাবুলকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এ রাজ্যে জমি নীতি নিয়ে সংশয় তো আছেই! তবে বাকি ভারত পারলে পশ্চিমবঙ্গ কেন পারছে না, তা আমাকে জানতে হবে।” রাজ্যের নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ববি হাকিমের সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন। বাবুলের আরও বক্তব্য, কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে রাজ্য সরব হয় ঠিকই। কিন্তু কেন্দ্র যে টাকা দিয়েছে, তা যথাযথ ভাবে খরচ হয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার যথেষ্ট অবকাশ আছে। মন্ত্রীর কটাক্ষ, “গ্লাসের খালি জায়গাটা নিয়ে তো কান্নাকাটি বহু বছর ধরেই চলছে! কিন্তু যে টাকা এসেছে, তার কী হল?” জেএনএনইউআরএম প্রকল্পের আওতায় চলা বাসের প্রসঙ্গ টেনে বাবুল বলেন, “যে বাসগুলি অর্ডার করা হয়েছে, সেগুলির হাল কী? সেগুলি রাস্তায় চলছে কি না, জানতে হবে। আমায় সত্যান্বেষী হতে হবে।”
আসানসোল-সহ রাজ্যের কিছু এলাকায় কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের অধীনে যে আবাসন প্রকল্প হওয়ার কথা, সেগুলির হাল হকিকতও খতিয়ে দেখবেন বাবুল। আগামী সোমবার রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের নিয়ে তিনি ছ’টি জায়গায় যাবেন। মঙ্গলবার দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকও করবেন। বাবুলের কথায়, “ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে সস্তা বাহবা কুড়োনো আমার কাজ নয়। আমার নির্দিষ্ট তথ্য চাই। গুজরাত, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক কাজকর্মে এগিয়ে আছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ-সহ কিছু রাজ্য সব টাকা খরচ করতে পারেনি। কেন, সেটাই আমি জানতে যাব।”
মন্ত্রকের কাজ নিয়ে পূর্বসূরি প্রতিমন্ত্রী সৌগত রায় এবং দীপা দাশমুন্সির সঙ্গেও কথা বলবেন বাবুল। রাজনীতির লড়াই এবং মন্ত্রী হিসেবে উন্নয়নের কাজ দু’টিই পৃথক ভাবে চালিয়ে যাওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। নিজের উত্থানে দলের রাজ্য, জেলা এবং আসানসোল কেন্দ্রের নেতাদের ভূমিকা স্মরণ করে তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া দায়িত্ব নিজের সেরাটা দিয়ে পালন করব। তবে আসানসোলকে ভুলব না।”