স-বধূ অভীক দে-র (সবুজ পাঞ্জাবি-শাড়িতে) সঙ্গে (বাঁ দিক থেকে) জেএনএমের তদানীন্তন অধ্যক্ষ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, প্রাক্তন ছাত্র শুভঙ্কর ঘোষ ও ফিরোজ ই আব্বাস, আরজি করের সিনিয়র রেসিডেন্ট (রেডিয়োথেরাপি) সৌরভ পাল এবং শেখ মহম্মদ অখিল। ছবিটি জেএনএম হাসপাতাল সূত্রে প্রাপ্ত।
আর জি করে নির্যাতিত ও নিহত স্নাতকোত্তরের ছাত্রীটি যেখান থেকে এমবিবিএস পাশ করেন, সেই কল্যাণী জেএনএমেই দুর্নীতি ও ‘থ্রেট সিন্ডিকেট’-এর বাসা বলে ক্রমশ জানা যাচ্ছে। সদ্য সাসপেন্ড হওয়া তৃণমূলের চিকিৎসক-নেতা অভীক দে-র ছত্রচ্ছায়াতেই তা আড়ে-বহরে বেড়েছিল বলেও অভিযোগ।
নদিয়ার জেএনএম সূত্রের খবর, বহু গভীরে বিস্তৃত ছিল অভীকের প্রভাব। সম্প্রতি তাঁর বিয়ে সংক্রান্ত একটি ভোজের ছবি প্রকাশ্যে এসেছে যেখানে খোশমেজাজে হাজির জেএনএমের তৎকালীন অধ্যক্ষ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, দুই প্রাক্তনী শুভঙ্কর ঘোষ ও ফিরোজ ই আব্বাস, বর্তমান ছাত্র শেখ মহম্মদ অখিল এবং আর জি করের সিনিয়র রেসিডেন্ট (রেডিয়োথেরাপি) সৌরভ পাল। ২০২০ সালে জেএনএম থেকে এমবিবিএস হয়ে বেরোন শুভঙ্কর এবং ফিরোজ। সেই বছরেই টিএমসিপি-র শাখা সংগঠন হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে ‘মেডিক্যাল সেল’। সভাপতি হন টিএমসিপি-র বর্তমান রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য, মুখ্য আহ্বায়ক অভীক দে, সম্পাদক ফিরোজ ই আব্বাস, অন্যতম সাধারণ সম্পাদক শুভঙ্কর ঘোষ। শুভঙ্কর এখন হুগলির তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার, ফিরোজ নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের বিএমওএইচ। কিন্তু সরকারি চাকরির চেয়ে জেএনএমের ব্যাপারে তাঁদের উৎসাহ বেশি বলে সহকর্মীদের একাংশের দাবি।
জেএনএম সূত্রের দাবি, মূলত এঁদের মাধ্যমেই জেএনএমে কর্তৃত্ব কায়েম রেখেছিলেন অভীক। নানা উপায়ে টাকা তোলার চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছিল এবং বকলমে এঁরাই সব নিয়ন্ত্রণ করতেন বলে অভিযোগ। এঁদেরই মদতে প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন পিজিটি শেখ অখিল বা ইন্টার্ন আলিম বিশ্বাসেরা। এই অখিলকেই সুপারের ঘরে টেবিল চাপড়ে শাসাতে (আনন্দবাজার ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি) দেখা গিয়েছিল। এক ছাত্রীকে মারধর বা নামের আগে ‘এমডি’ লিখে রোগী দেখার অভিযোগও ছিল তাঁর বিরুদ্ধে।
তবে অভীক-বৃত্তে নাম জড়ানো সকলেই এখন যাবতীয় অভিযোগ এবং ঘনিষ্ঠতার কথা অস্বীকারে ব্যস্ত। প্রাক্তন অধ্যক্ষ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “অভীকের সঙ্গে তেমন সম্পর্ক ছিল না। বিয়ের অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ করলে যেতেই হয়।” শেখ অখিলের দাবি, “মেডিক্যাল কাউন্সিলের পেনাল অ্যান্ড এথিক্যাল কমিটির সদস্য হওয়ায় ওঁর সঙ্গে আলাপ। তার বেশি নয়।” শুভঙ্কর আর ফিরোজ দু’জনেরই দাবি, সাংগঠনিক কারণেই অভীকের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ। শনিবার অভীককে ফোন করা হলেও, তিনি তা ধরেননি। মেসেজের জবাবও দেননি।