অভিযান: বহরমপুরের সাটুইয়ে মদের ঠেক ভাঙছে পুলিশ।
শান্তিপুরে বিষমদে মৃত্যুর ঘটনার পরে ফের উঠেছে সেই প্রশ্ন। কেন ভাঙা হয় না চোলাইয়ের ঠেক?
আবগারি দফতরের দাবি, চোলাইয়ের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চালান তাঁরা। কিন্তু সেই কাজ করতে গিয়ে তীব্র বাধার মুখোমুখি হতে হয় তাঁদের। গত তিন মাসে অন্তত ৩০টি জায়গায় চোলাইয়ের ঠেক ভাঙতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছেন দফতরের কর্মী-অফিসারেরা। অভিযান বন্ধ করে তাঁদের পালিয়ে আসতে হয়েছে। কয়েকটি স্থানে তাঁদের ধরে রেখে মারধর পর্যন্ত করা হয়েছে। পুলিশ ডেকে ছাড়া পেতে হয়েছে তাঁদের। অভিযোগ, প্রতিটি ক্ষেত্রেই চোলাই চাঁইদের হয়ে সরকারি কর্মীদের বাধা দিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। তাঁদের নেপথ্যে কিছু রাজনৈতিক নেতা ছিলেন বলেও আবগারি বিভাগের কর্তাদের একাংশের দাবি। নবান্নে তাঁদের নামে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়েছে কিনা জানা নেই।
আবগারি দফতর সূত্রে বলা হচ্ছে, রাজ্যে ডায়মন্ড হারবার, সিঙ্গুর, উলুবেড়িয়া, হুগলি, পূর্বস্থলী-কালনা, আলিপুরদুয়ার চা-বাগান এলাকায় সবচেয়ে বেশি চোলাই তৈরি হয়। পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং, বাঁকুড়া, বীরভূমের কয়েকটি স্থানেও চোলাইয়ের কারবার রমরমিয়ে চলছে। ডায়মন্ড হারবারের তৈরি চোলাই নৌকা করে চলে যায় গেঁওখালি বা শ্যামপুর। উলুবেড়িয়া, সিঙ্গুরের চোলাই ছড়িয়ে পড়ে হাওড়া-হুগলির বিস্তীর্ণ এলাকায়। সবংয়ের চোলাই যায় ঝাড়গ্রাম পর্যন্ত। আর কালনার চোলাই নদীর দু’পারের জনপদগুলিতে খেয়া নৌকায় যাতায়াত করছে।
আবগারি দফতরের দাবি, ডায়মন্ড হারবার, উলুবেড়িয়া, সিঙ্গুর, সবং, পূর্বস্থলী-কালনা বা আলিপুরদুয়ারে শাসক দলের বেশ কয়েক জন নেতা-বিধায়ক চোলাইয়ের কারবারিদের ‘রক্ষা’ করে চলেছেন। এক গোপন রিপোর্টে সেই কথা নবান্নকে জানানো হয়েছে। শান্তিপুরের ঘটনার পর রাজ্য জুড়ে ফের চোলাই ঠেক ভাঙার অভিযান শুরু হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কতটা হবে তা নিয়ে সন্দিহান আবগারি কর্তাদের একাংশই।
কেন চোলাইয়ের বাড়বাড়ন্ত? কারণ ৬০০ মিলিলিটার এক বোতল সরকারি দেশি মদের দাম ৭৫ টাকা। সমপরিমাণ চোলাইয়ের দাম ৪০-৪৫ টাকা। পাউচ প্যাক ১০-২০ টাকায় মেলে। এক মদ ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘এ ছাড়া দক্ষ কারিগর বানালে দেশি মদের থেকে চোলাইয়ের স্বাদ ভাল।’’