প্রতীকী ছবি।
ভোরবেলায় একা রাস্তায় ছিলেন বছর বত্রিশের মূক ও বধির মহিলা। অভিযোগ, এক ট্রাকচালক তাঁকে জোর করে গাড়িতে তুলে ধর্ষণের চেষ্টা করে। গোঙানির আওয়াজ শুনে কর্তব্যরত সিভিক ভলান্টিয়ার ট্রাকের কাছে পৌঁছতেই গাড়ি ছোটায় চালক। খবর পেয়ে গাড়ি নিয়ে ট্রাকটিকে ধাওয়া করে পূর্ব বর্ধমানের গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ। প্রায় ১৫ কিলোমিটার পরে ট্রাক থামাতে বাধ্য করে, ধরা হয় চালককে। চালকের আসনের পিছন থেকে হাত-পা-মুখ বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার হয় মহিলাকে।
সোমবার পূর্ব বর্ধমানের গুসকরার শিরিষতলার ওই ঘটনায় ধৃত আবুল শেখ মঙ্গলকোটের কুলসোনার বাসিন্দা। মঙ্গলবার তাকে ১৪ দিন জেল-হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয় বর্ধমান আদালত। ‘নির্যাতিতা’ মহিলার চিকিৎসার জন্য বর্ধমান মেডিক্যালের সুপারকে মেডিক্যাল বোর্ড গড়ার নির্দেশও দিয়েছে আদালত।
পুলিশ সুপার (পূর্ব বর্ধমান) ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুলিশ খুব ভাল কাজ করেছে। ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে ধাক্কা মেরে ফেলা দিয়েছিল। সাহসিকতা ও বুদ্ধিমত্তার জন্য তাঁকে পুরস্কার দেওয়া হবে।’’
আরও পড়ুন: আগ্নেয়াস্ত্রের মুখে ঝাঁপিয়ে দুস্কৃতী ধরলেন এসআই
পুলিশ জানিয়েছে, মুর্শিদাবাদ থেকে সিমেন্টবোঝাই করে ওই ট্রাকটির দুর্গাপুর যাওয়ার কথা ছিল। ভোর সাড়ে ৪টে নাগাদ ট্রাকটি দাঁড়িয়েছিল শিরিষতলা এলাকায়। সেখানেই আবুল শেখ ওই মহিলাকে জোর করে গাড়িতে তোলে বলে অভিযোগ। কাছেই ছিলেন সিভিক ভলান্টিয়ার বিকাশ গড়াই। তাঁর দাবি, গোঙানি শুনে তিনি ট্রাকের কাছে যেতেই গাড়ি ছোটায় আবুল। প্রথমে ট্রাকের পিছনে ছুটতে শুরু করেন তিনি। না পেরে সঙ্গে সঙ্গে গুসকরা ফাঁড়িতে খবর দেন।
গুসকরা ফাঁড়ির ওসি অরুণ সোম ওই ট্রাকের পিছু ধাওয়া করেন। পুলিশের দাবি, ট্রাকটি গতি বাড়িয়ে মানকরের রাস্তা ধরে। প্রায় ১৫ কিলোমিটার পিছু ধাওয়া করে অভিরামপুরের কাছে, ‘ওভারটেক’ করে ট্রাকটিকে থামতে বাধ্য করে পুলিশ। মহিলাকে উদ্ধার করার পরে, অরুণবাবু স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে ধৃতের বিরুদ্ধে অপহরণ ও ধর্ষণের চেষ্টার মামলা রুজু করেন। স্থানীয় সূত্রের দাবি, ওই মহিলা শিরিষতলায় পরিচিত নন। তবে গত কয়েক দিন ধরে তাঁকে এলাকায় ঘুরতে দেখা গিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, শারীরিক পরীক্ষার পরে, আশ্রয়ের আবেদন জানিয়ে আদালতে পেশ করা হবে মহিলাকে। রাজ্য মহিলা কমিশনের প্রাক্তন সদস্য শিখা আদিত্য বলেন, ‘‘রাস্তায় একা বেরোনোই যেন বিপদের হয়ে গিয়েছে মেয়েদের, তা সে যে বয়সেরই হোক।’’