ভারতী ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
কলকাতায় ভারতী ঘোষের বাড়ি, জেলায় জেলায় তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ পুলিশ আধিকারিকদের বাড়ি-কোয়ার্টারে তল্লাশির পরেও ‘ভারতী-প্রসঙ্গ’ এড়িয়েছিল সিআইডি। সাফ জানিয়েছিল, ‘ভারতী ঘোষের বাড়িতে তল্লাশি হয়নি’।
অথচ, পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুর থানার যে মামলার সূত্রে এত খানাতল্লাশি, তাতে আরও এক জন গ্রেফতারের পরে ঘাটাল আদালতে পেশ করা নথিতে ভারতী ঘোষের নাম উল্লেখ করল সিআইডি। এত দিনে এই মামলার লিখিত ভাবে এল ভারতীর নাম। তবে সেই নামের আগে প্রাক্তন পুলিশ আধিকারিকের পদমর্যাদার কোনও উল্লেখ নেই।
দাসপুরের ব্যবসায়ী চন্দন মাজিকে সোনা কেনার নামে প্রতারণার অভিযোগে যে মামলা হয়েছে, তাতেই বিহার থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে রাজমঙ্গল সিংহকে। সোমবার তাঁকে ঘাটাল আদালতে হাজির করে সাত দিনের জন্য হেফাজতে নেয় সিআইডি। সেই সূত্রে সিআইডি লিখিত ভাবে আদালতকে জানিয়েছে, ২০১৬-র নভেম্বরে নোটবন্দির পরে বাতিল টাকায় বিপুল সোনা কিনে রাজমঙ্গলকে গোপন ডেরায় রাখতে দেন ভারতী ঘোষ। রাখতে দেওয়া হয়েছিল প্রচুর টাকা ও অন্য মূল্যবান জিনিসও। সে সবের হদিস পেতে রাজমঙ্গলকে জেরা করা জরুরি।
চন্দনের অভিযোগে ভারতীর নাম না থাকায় প্রশ্ন উঠেছিল। তারপর খোদ ডিআইজি (সিআইডি) নিশাত পারভেজের ভারতী-প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়ায় জল্পনা বাড়ে। এই অবস্থায় আদালতে পেশ করা সিআইডি-র নথিতে ভারতীর নামোল্লেখ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এ নিয়ে সিআইডি কর্তারা মুখ খোলেননি।
‘ভারতী-প্রসঙ্গ’ এড়িয়ে গেলেও রবিবার রাতে নাকতলার একটি এবং মাদুরদহের একটি ফ্ল্যাটে গিয়ে সমন জারি করেছে সিআইডি। ফ্ল্যাটের মালিক অথবা বাসিন্দাদের নথিপত্র নিয়ে আজ, মঙ্গলবার ভবানী ভবনে যেতে বলা হয়েছে। সিআইডি মালিকের নাম না জানালেও সূত্রের খবর, মাদুরদহের ফ্ল্যাট ভারতীর স্বামী এম এ ভি রাজু স্ত্রীর নামে হস্তান্তর করেছেন। আর নাকতলার ফ্ল্যাট রয়েছে ভারতীর ঘনিষ্ঠ এক আত্মীয়ের নামে। তালাবন্ধ থাকায় সেখানে তল্লাশি হয়নি। তবে ফ্ল্যাটের সামনে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। ভারতীর আইনজীবী বিজন ঘোষ ও পিনাকী ভট্টাচার্যের দাবি, ‘‘জিতেশ অ্যান্ড আজমেরা অ্যসোসিয়েটস নামে একটি চাটার্ড সংস্থাকে নোটিস পাঠিয়েছে সিআইডি। ওই সংস্থার সঙ্গে ভারতী ঘোষের সম্পর্ক নেই।’’
ভিন্ রাজ্য থেকে ফোনে এ দিন ভারতীও বলেন, ‘‘৬, শরৎ চ্যাটার্জি অ্যাভিনিউয়ের আবাসন আমার পৈতৃক সম্পত্তি। আমার দুই ভাই ও আমি ওই সম্পত্তির মালিক। ওখানে একটি চার্টাড ফার্মকে নোটিস পাঠানো হয়ে। অথচ আমাকে নোটিস পাঠানো হয়েছে বলে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।’’