ছবি:সংগৃহীত।
ছাত্র-শিক্ষকের অনুপাতের ভারসাম্য ঠিক করতে চেয়ে স্কুলশিক্ষা দফতরের নির্দেশিকা ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে। ওই নির্দেশিকা ‘বেআইনি’ বলে অভিযোগ করে দ্রুত তা বাতিল করার দাবি জানিয়েছে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। যদিও স্কুলশিক্ষা দফতরের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, পড়ুয়াদের স্বার্থে আইন মেনে ঠিক পথেই এগোচ্ছে তারা।
গত বুধবার রাজ্যের সব জেলা স্কুল পরিদর্শক (ডিআই)-কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ৪০ জন পড়ুয়া-পিছু এক জন শিক্ষক বা শিক্ষিকা, এই অনুপাত ধরে কোথায় ক’জন বাড়তি শিক্ষক বা শিক্ষিকা রয়েছেন, সেই তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। যে-সব স্কুলে শিক্ষক-ঘাটতি রয়েছে, ওই তালিকা দেখে বাড়তি শিক্ষক বা শিক্ষিকাকে পাঠানো হবে সেখানে।
এর বিরুদ্ধেই সরব হয়েছেন শিক্ষকেরা। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল জানান, শিক্ষার অধিকার আইন অনুসারে উচ্চ প্রাথমিকে ৩৫ জন পড়ুয়া-পিছু এক জন শিক্ষক থাকার কথা। ‘‘এ ক্ষেত্রে পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়িয়ে ৪০ করে দেওয়ায় বহু শিক্ষক-পদ অবলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এটা সম্পূর্ণ বেআইনি,’’ বলছেন স্বপনবাবু। আর নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্যের প্রশ্ন, কোন শিক্ষক বা শিক্ষিকা বাড়তি, সেটা স্কুল ঠিক করবে কী ভাবে? তাঁদের বদলি করতে গেলে বিষয়-ভিত্তিক শিক্ষকের অনুপাত বিঘ্নিত হতে পারে। ‘‘সরকারের উচিত দ্রুত প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ করা,’’ বলেছেন ওই শিক্ষক-নেতা।
স্কুলশিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে অবশ্য জানানো হয়েছে, নির্দেশিকায় যে-নিয়মের কথা বলা হয়েছে, সেটাই চালু হবে। তবে প্রথম পর্যায়ে দফতর ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতের পুরো ছবিটা হাতে পেতে চায়। সেই জন্যই স্কুল পরিদর্শকদের কাছে থেকে তালিকা চাওয়া হয়েছে। দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘স্কুলে পড়ুয়া কম, অথচ প্রয়োজনের থেকে বেশি শিক্ষক থাকবেন— এটা সরকার চলতে দেবে না। আইন মেনেই সব কিছু করা হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, তুলনায় নতুন শিক্ষকদেরই বদলি প্রক্রিয়ায় আনা হতে পারে। তবে সেটা এখনও চূড়ান্ত হয়নি বলে জানান ওই শিক্ষাকর্তা।