(বাঁ দিকে) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হিমন্ত বিশ্বশর্মা (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
দু’বছর আগে খড়্গপুর আইআইটির পড়ুয়া ফাইজ়ান আহমেদের রহস্যমৃত্যুর ঘটনা ঘটেছিল। হস্টেলের ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছিল অসমের বাসিন্দা ওই ছাত্রের ঝুলন্ত দেহ। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে সেই মৃত্যুর তদন্ত চলছে। তার মধ্যেই ফরেনসিক রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে মঙ্গলবার বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। সেই চিঠির মূল প্রতিপাদ্য বিষয়, ফাইজ়ানের মৃত্যুর তদন্তভার দেওয়া হোক সিবিআইকে। হিমন্তের চিঠির বিষয়ে নবান্নের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
২০২২ সালের ১৪ অক্টোবর খড়্গপুর আইআইটির হস্টেলের ঘর থেকে উদ্ধার করা হয় অসমের তিনসুকিয়ার বাসিন্দা ফাইজ়ানের ঝুলন্ত দেহ। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে তৃতীয় বর্ষের বিটেক পড়ুয়া ছিলেন তিনি। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, আত্মহত্যা নয়, তাঁকে খুন করা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, র্যাগিংয়ের শিকার হয়েছেন ওই ছাত্র। বাবা-মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতেই কলকাতা হাই কোর্ট মৃত ছাত্রের দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। তার পর বিশেষ তদন্তকারী দলও গঠন করা হয়। সেই দলই বিভিন্ন নমুনা ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠায়।
ফাইজ়ানের মৃত্যুর পরেও হিমন্ত সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে মমতাকে চিঠি লিখেছিলেন। মঙ্গলবারের চিঠিতে সেই প্রসঙ্গও উল্লেখ করেছেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী। ফরেনসিক রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে হিমন্ত লিখেছেন, ফাইজানের গলার ডান পাশে গুলির দাগের গভীর ক্ষতচিহ্ন ছিল। কোপের দাগও ছিল দগদগে। হিমন্ত লিখেছেন, ‘‘ফরেনসিক রিপোর্টে শিউরে ওঠার মতো বিষয় প্রকাশ্যে এসেছে।’’ মৃত ছাত্রের বাবা-মাকে সুবিচার দিতে দোষীদের গ্রেফতার এবং শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি। সেই সূত্রেই হিমন্তের অনুরোধ, রাজ্য সরকার এই তদন্তভার সিবিআইকে হস্তান্তর করুক।
এই ঘটনায় খড়্গপুর আইআইটির তৎকালীন অধিকর্তা ভিকে তিওয়ারিকে কলকাতা হাই কোর্টের ভর্ৎসনার মুখেও পড়তে হয়েছিল। বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা বলেছিলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশের পরও আইআইটি কর্তৃপক্ষ উদাসীন। এটা উচিত নয়। খড়্গপুর আইআইটি-র ডিরেক্টর কি আদালতের ভাষা বোঝেন না? তাঁর সন্তানের সঙ্গে হলেও কি এমনই আচরণ করতেন?’’