সিজিও কমপ্লেক্সে ধৃত অয়ন শীলের বৃদ্ধ বাবা-মা। ছবি: সংগৃহীত।
নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ডেকে পাঠানো হয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র হাতে গ্রেফতার হওয়া প্রোমোটার অয়ন শীলের বৃদ্ধ বাবা-মাকে। বুধবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ কলকাতার সিজিও কমপ্লেক্সে ইডির দফতরে হাজিরা দেন ওই বৃদ্ধ দম্পতি। ইডি সূত্রের খবর, অবৈধ আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে নিজের একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি, মা-বাবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও ব্যবহার করেছিলেন অয়ন। অয়নের বাবা সদানন্দ শীলের দু’টি এবং মা অমিতা শীলের একটি অ্যাকাউন্ট অয়ন ব্যবহার করতেন বলে ইডি সূত্রে খবর।
অয়ন যে মা-বাবার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে বিপুল অঙ্কের টাকা লেনদেন করতেন, সে কথা আদালতেও জানায় ইডি। তার পরই নগর দায়রা আদালতের বিচারক ইডির আইনজীবীর কাছে জানতে চান, কেন এখনও অয়নের বাবা-মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে না। সেই সূত্রে সদানন্দ এবং অমিতাকে ডেকে পাঠায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটি।
আদালতে আগেই ইডি জানিয়েছিল, অয়নের হিসাব-বহির্ভূত বিপুল সম্পত্তির হদিস পাওয়া গিয়েছে। নিয়োগ দুর্নীতিতে অয়নরা উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) বিকৃত করার কাজ করতেন বলেও তদন্তে দাবি করা হয়েছে। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, কোনও যোগ্য প্রার্থীদের ওএমআর শিটে ঠিক উত্তরের পাশে ভুল উত্তর চিহ্নিত করে তাঁদের নম্বর কমিয়ে দেওয়া হত। সেই জায়গায় টাকার বিনিময়ে নিয়োগ করা হত অযোগ্য প্রার্থীদের। আবার যে সব চাকরিপ্রার্থী টাকা দিয়েছেন, তাঁদের ফাঁকা ওএমআর শিট ঠিক উত্তরে ভরিয়ে দিতেন অয়নরা। ইডি এ-ও জানিয়েছে, যে সব পরীক্ষার্থী সঠিক উত্তর দিয়ে বেশি নম্বর পেয়ে যেতেন, তাঁদের ওএমআর শিট বিকৃত করা হত। ওএমআর শিটে হয়তো সঠিক অপশনে টিক করেছেন ওই চাকরিপ্রার্থী, সেই জায়গায় ভুল উত্তরের ঘরেও পেনসিল দিয়ে ‘ডার্ক’ করে দেওয়া হত। ফলত ওই চাকরিপ্রার্থীর নম্বর কমে যেত।
শুধু শিক্ষক নিয়োগই নয়, অয়ন বিভিন্ন পুরসভার নিয়োগ পরীক্ষায় ওএমআর শিট বিকৃত করার সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলেও দাবি করে ইডি। সব মিলিয়ে প্রায় ১,০০০ চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে ৪৫ কোটি টাকা তোলা হয় বলে অভিযোগ।