অমিত শাহ। ছবি: পিটিআই।
কলকাতায় সভা করতে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আর তাঁকে কাছে পেয়ে ‘বঞ্চনা’র স্মারকলিপি তুলে দিতে চায় অন্তত ১২টি সংগঠন। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সভার আগে কিংবা পরে ওই সংগঠনগুলির প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করে স্মারকলিপি গ্রহণ করবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর, এই ১২টি সংগঠনের মধ্যে রয়েছে চাকরিপ্রার্থী, ডিএ আন্দোলনকারীদের সংগঠনও। এমনকি যে সংগঠন বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিল, তারাও রয়েছে ওই ১২টি সংগঠনের তালিকায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে স্বারকলিপি তুলে দিতে চায় চন্দ্রচূড় গোস্বামীর হিন্দু মহাসভাও। সংগঠনগুলি রাজ্য বিজেপিকে জানিয়েছে, শাহের কাছে তারা দাবিদাওয়া সংক্রান্ত স্মারকলিপি দিতে চান।
রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর, চন্দ্রচূড়ের হিন্দু মহাসভা বাদ দিয়ে বাকি ১১টি সংগঠনের স্মারকলিপির বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এখনও অবধি জানা যায়নি শাহ ওই সংগঠনগুলির প্রতিনিধিদের বক্তব্য শুনবেন কি না। দিল্লি থেকে আসা নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্বও। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে ইতিবাচক উত্তর এলে শাহ কাদের সঙ্গে দেখা করবেন এবং কোথায় দেখা করবেন, তা চূড়ান্ত করা হবে।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, ধর্মতলায় বিজেপির মূল মঞ্চে তিনটি স্তর থাকছে। মঞ্চের মাঝে থাকছেন সভার মধ্যমণি শাহ। শাহের এক পাশে থাকছেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং রাজ্যের অন্যান্য শীর্ষ নেতা। অন্য পাশে থাকবেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির সাংসদ-বিধায়কেরা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিরাপত্তার কারণেই মূল মঞ্চে ওঠার বিষয়ে কড়াকড়ি করা হচ্ছে। কিন্তু বিজেপি সূত্রে খবর, দলের বেশ কিছু পদাধিকারীকে মূল মঞ্চে রাখতেই হবে। তাই মূল মঞ্চের লোকসংখ্যা বাড়তে পারে, এমনটা ধরে নিয়েই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে অনুমতি চাওয়া হয়। বিজেপি সূত্রে খবর, প্রয়োজনীয় অনুমতি মিলেছে।
সাম্প্রতিক বেশ কিছু সভাতেই দেখা গিয়েছে, বিজেপির মূল মঞ্চে ঠাঁই পেয়েছেন দলের ‘শহিদ’ পরিবারের সদস্যেরা। তবে এ বার সেই নিয়মে খানিক বদল হতে পারে। এই প্রসঙ্গে সুকান্ত বলেন, “শহিদেরা আমাদের অন্তরে। তবে এ বারের সভাটা বঞ্চিতদের জন্য।” তাই নির্দিষ্ট পদাধিকারী ছাড়া কেউ মূল মঞ্চে উঠতে পারবেন না বলেই জানা যাচ্ছে। স্বারকলিপি দেওয়ার জন্যেও কাউকে মঞ্চে ওঠার অনুমতি দেওয়া হবে না। তবে মূল মঞ্চের পিছনে একটি ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে। সভা শুরুর আগে বা পরে ওই ক্যাম্পে স্মারকলিপি দিতে চাওয়া সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে শাহ দেখা করবেন কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের তরফে সবুজ সঙ্কেত এলে সভার শেষে শুভেন্দু এবং সুকান্তদের উপস্থিতিতেই শাহ স্মারকলিপিগুলি নিতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহের সর্বশেষ যে সফরসূচি পাওয়া গিয়েছে, তাতে দুপুর সওয়া ১টায় তিনি কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছবেন। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে আসবেন রেসকোর্স। এর পরে সড়কপথে পৌনে ২টোর সময়ে সভাস্থল। বিমানবন্দর থেকে সভাস্থল পর্যন্ত শাহের সঙ্গে থাকবেন সুকান্ত এবং শুভেন্দু। শাহের উপস্থিতিতেই তাঁরা বক্তব্য রাখবেন। এর পরে আড়াইটে থেকে শাহের বক্তব্য রাখার কথা। সূচি অনুযায়ী, জনসভা থেকে শাহ রেসকোর্সের দিকে রওনা দেবেন বিকেল সওয়া ৩টে নাগাদ।