রবিবার সকালে তখনও উদ্ধারের অপেক্ষায় পর্যটকেরা। নিজস্ব চিত্র।
প্রবল তুষারপাতের জেরে সিকিমের ছাঙ্গু লেক এলাকায় আটকে পড়া এক হাজারেরও বেশি পর্যটককে উদ্ধার করল সেনাবাহিনী। রবিবার তাঁদের নিরাপদে গ্যাংটকে নেমে আসার ব্যবস্থা করে সিকিম প্রশাসন, পুলিশ এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দল। রবিবার বিকেল পর্যন্ত পর্যটকদের নিরাপদে নামিয়ে আনার কাজ চলেছে। এ দিনও পশ্চিমি ঝঞ্ঝার প্রভাবে ওই এলাকায় ভারী তুষারপাত শুরু হয়।
শনিবার অন্তত ৩০০ পর্যটক আটকে রয়েছেন বলে প্রাথমিক ভাবে খবর আসে। পরে রাত ১১টা পর্যন্ত সেনাবাহিনী তাঁদের ১৭ মাইল ছাউনি থেকে ছাঙ্গু লেক পর্যন্ত জওহরলাল নেহরু রোড বরাবর প্রায় ১৫ কিলোমিটার লম্বা এলাকা জুড়ে উদ্ধার কাজ চালায়। সঙ্গে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও ছিল। সেনা আধিকারিকেরা জানান, সব মিলিয়ে এক হাজারের বেশি পর্যটক আটকে পড়েছিলেন। তাঁদের শনিবার রাতেই নিরাপদে শিবিরে এনে সমস্ত সাহায্য করা হয়। দেওয়া হয় গরম জামাকাপড় ও খাবার। বাহিনীর তরফে কর্নেল দেবেন মাখিজা রবিবার জানান, প্রবল ঠান্ডায় তাপমাত্রা নেমে গিয়েছিল শূন্যের নীচে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বরফ জমে গিয়ে রাস্তা পিছল হয়ে যাচ্ছিল। তার মধ্যেই উদ্ধার কাজ চালিয়ে যায় সেনার ব্ল্যাক ক্যাট ডিভিশন। পূর্ব সিকিমের পুলিশ সুপার শিবা এল্লাসিরি জানান, দিল্লি, কলকাতা ছাড়াও অন্যান্য এলাকা থেকেও পর্যটক এসেছিলেন। তুষারপাতের মধ্যে হাঁটার জন্য শিবিরে আনার পর কয়েক জন অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা করে সুস্থ করে তোলা হয়।
হিন্দমোটরের বাসিন্দা পর্যটক সুভাষ কর্মকার বলেন, ‘‘বরফের রাস্তায় পিছলে গিয়ে পরপর গাড়ির ঠোকাঠুকি দেখে মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছিল। নীচের দিকে হাঁটছিলাম আমরা। রাতে সেনার আতিথেয়তা না পেলে হয়তো প্রবল ঠান্ডায় অসুস্থ হয়ে পড়তাম।’’ পর্বতারোহীরা জানাচ্ছেন, উচ্চ অক্ষাংশে এ রকম পরিস্থিতিতে অনেক সময় হাইপোথার্মিয়া হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। তবে এ যাত্রায় সে রকম কিছু হয়নি বলেই জানাচ্ছে সিকিম প্রশাসন। এ দিন ১৭ মাইল শিবির থেকে সকালে গ্যাংটক ফেরানোর সময়ও প্রবল তুষারপাতের মুখে পড়েন পর্যটকেরা। এ দিনও খারাপ আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিয়ে রেখেছিল আবহাওয়া দফতর। কিন্তু তার মধ্যেই যাঁদের গাড়ি ছিল, তাঁরা গাড়ি নিয়ে নেমে আসেন। সকাল পর্যন্ত প্রায় ২০০ পর্যটক গাড়ি জোগাড় করতে পারেননি বলে তাঁদের বেশ কিছুটা পথ এগিয়ে দেয় সেনা। পরে সকলেই গ্যাংটকে নেমে আসেন। শনিবার রাতে যাঁদের এনজেপি থেকে ট্রেন ধরার ছিল, তাঁদের অনেকেই ট্রেন ধরতে পারেননি বলেই পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানান।