তৃণমূল হঠাতে তৈরি কি, বঙ্গ বিজেপিকে প্রশ্ন শিবপ্রকাশের

দলীয় সূত্রের আরও খবর, ওই প্রসঙ্গেই শিবপ্রকাশ বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ যে পরিশ্রম করে গুজরাতের কার্যত হারা লড়াইকে জিতিয়েছেন, তা কি রাজ্য নেতারা দেখছেন না? তাঁরা শেষ কবে জেলায় গিয়েছেন, সেই প্রশ্ন করেন শিবপ্রকাশ।

Advertisement

রোশনী মুখোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:৫২
Share:

গুজরাত ভোটে তাঁরা হেরেই যাচ্ছিলেন! বহু পরিশ্রম করে এবং সংগঠনের জোরে শেষ রক্ষা হয়েছে সেখানে। পশ্চিমবঙ্গে কি দলের সেই পরিস্থিতি আছে যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করার স্বপ্ন দেখছেন এখানকার নেতৃত্ব? দলের বিদ্বজ্জন সেলের বৈঠকে বুধবার এই প্রশ্ন তুলে দিলেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশ।

Advertisement

কলকাতায় আইসিসিআর-এ বুধবার বিজেপি-র বিদ্বজ্জন সেলের বৈঠকে শিবপ্রকাশ গুজরাত প্রসঙ্গ তোলেন এ রাজ্যের নেতাদের ঝাঁকুনি দেওয়ার জন্য। দলীয় সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে মোহিত রায়, অম্বুজ মহান্তি, পঙ্কজ রায়-সহ পাঁচ জন বক্তৃতা করেন। মোহিতবাবু রাজ্যে সংখ্যালঘু মুসলিমদের সংখ্যাবৃদ্ধির কথা তুলে ‘বিপন্নতা’ ব্যক্ত করার পরে শিবপ্রকাশ তাঁর বক্তৃতায় পাল্টা বলেন, রাহুল গাঁধীকে দেখে শেখা উচিত। তিনি যেমন গুজরাতে গিয়ে ভালবাসা দিয়ে ঘৃণাকে অতিক্রম করার কথা বলেছেন, এ রাজ্যের নেতাদের তা মাথায় রাখা উচিত।

শিবপ্রকাশ বুঝিয়ে দেন, সেলের কাজে তিনি মোটেই সন্তুষ্ট নন। তিনি বলেন, তাঁরা ধর্মীয় সংগঠন করছেন না। করছেন একটি রাজনৈতিক দল। যার কাজ ভোটে জেতা। অথচ, কেমন করে সেই কাজটা হবে, তা বলতে পারছেন না রাজ্য নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রের আরও খবর, ওই প্রসঙ্গেই শিবপ্রকাশ বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ যে পরিশ্রম করে গুজরাতের কার্যত হারা লড়াইকে জিতিয়েছেন, তা কি রাজ্য নেতারা দেখছেন না? তাঁরা শেষ কবে জেলায় গিয়েছেন, সেই প্রশ্ন করেন শিবপ্রকাশ।

Advertisement

শিবপ্রকাশের এই বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট, দলের অন্দরে বিজেপি নেতৃত্ব মেনে নিচ্ছেন, ২২ বছর শাসনের পর এ বার গুজরাত তাঁদের যথেষ্ট বেগ দিয়েছে। মোদীও বুধবারই বিজেপি-র সংসদীয় দলের বৈঠকে সাংসদদের সতর্ক করেছেন যে— গুজরাতে জেতাটা খুব সহজ কাজ ছিল, এমন বিভ্রান্তিতে যেন তাঁরা না ভোগেন! বহু পরিশ্রমে এই জয় এসেছে। গুজরাতে মাটি কামড়ে পড়ে থাকতে গিয়ে হিমাচল প্রদেশে ছ’টি নির্বাচনী কর্মসূচি বাতিল করতে হয়েছিল অমিতকে। ৯০ দিনের প্রবাস কর্মসূচিও মাঝপথে বন্ধ করে গুজরাত চলে যান তিনি।

শিবপ্রকাশই এ দিন রাজ্য নেতাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন, তৃণমূলকে উৎখাত করার জন্য সংগঠন প্রস্তুত নয়। দলীয় সূত্রের খবর, মাত্র পাঁচটি জেলা থেকে সেলের আহ্বায়করা এসেছেন দেখে শিবপ্রকাশ বলেন, সংগঠনের এই অবস্থায় তাঁরা যেন তৃণমূলকে ক্ষমতাচ্যুত করার দিবাস্বপ্ন দেখান। যে দিন সব জেলায় অন্তত ৫০০ জন করে বিদ্বজ্জন জড়ো হবেন, সে দিন পরিবর্তনের কথা ভাবা যাবে। আগামী ১২ জানুয়ারি থেকে ২৩ জানুয়ারি সব জেলায় স্বামী বিবেকানন্দ এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন উপলক্ষে অনুষ্ঠান করার নির্দেশও দিয়েছেন শিবপ্রকাশ। বলেছেন, কোনও অজুহাতেই ওই কর্মসূচিতে শিথিলতা বরদাস্ত করা হবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement