বুকফাটা: স্মরণসভায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন অনুপমের মা এবং বাবা। মঙ্গলবার, বারাসতে। ছবি: সুদীপ ঘোষ।
স্মরণসভায় ঢুকতেই মা কল্পনারানি সিংহের চোখ আটকে গেল টেবিলে রাখা ফ্রেমবন্দি ছবিটির দিকে। ছেলে অনুপম সিংহের ছবি বুকে জড়িয়ে ধরে ডুকরে কেঁদে উঠলেন তিনি। বললেন, ‘‘আমাদের সব শেষ হয়ে গেল। ওদের শাস্তি চাই। কোনও মাকে যেন এমন দিন দেখতে না হয়।’’ সভায় ছিলেন মিনিট পনেরো। আগাগোড়াই ছেলের ছবি বুকে আগলে রেখেছিলেন।
পাশে বসেছিলেন স্বামী জগদীশ সিংহ। তাঁর চোখ দিয়েও তখন জল গড়িয়ে পড়ছে। তাঁর অভিযোগ, ‘‘খুনে শুধু মনুয়া নয়, ওর পরিবারের চার জন যুক্ত। ওদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’’ দোষীদের শাস্তির দাবিতে তিনি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন বলেও জানালেন। জগদীশবাবুর কথায়, ‘‘মনুয়ার পরিবারের অনেকে প্রভাবশালী। আমাদের মনে হচ্ছে তাঁরা তদন্তকে প্রভাবিত করতে পারেন। তাই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চাই।’’
গত ২ মে বারাসতের হৃদয়পুরে নিজের বাড়িতে খুন হয়েছিলেন অনুপম। ওই ঘটনায় পুলিশ ইতিমধ্যেই অনুপমের স্ত্রী মনুয়া ও তার প্রেমিক অজিত রায়কে গ্রেফতার করেছে। তারা এখন জেল হেফাজতে। এ দিন অনুপমের বন্ধুরা স্থানীয় শেঠপুকুরের মাঠে ওই সভার আয়োজন করেছিলেন। সেখানেই এসেছিলেন বাংলাদেশের কেশবপুরের বাসিন্দা পেশায় চিকিৎসক জগদীশবাবু ও তাঁর স্ত্রী কল্পনারানিদেবী।
কী কারণে খুন হতে হল ছেলেকে? তাঁরা মনে করছেন, অজিতের সঙ্গে প্রেমের পাশাপাশি সম্পত্তিও একটা কারণ ছিল। জগদীশবাবু বলেন, ‘‘বিয়েতে পাওয়া প্রচুর সোনার গয়না ছিল মনুয়ার কাছে। এখনও পর্যন্ত সেগুলির কোনও হদিস মেলেনি।’’ খুনের পরে তাঁরা এ দেশে এলেও তাঁদের ভয় দেখিয়ে কার্যত তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ।