অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর ভাইপো সুমিত
প্রাথমিক শিক্ষকের যোগ্যতা নির্ধারণ পরীক্ষা (টেট) পাশ না করেই চাকরি পাওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। তাঁর কাছে ওই পরীক্ষায় পাশ করার শংসাপত্র রয়েছে বলেই দাবি করলেন বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ভাই (জ্যেঠুর ছেলে) সুমিত মণ্ডল। তাঁকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলে বুধবার বোলপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করতেও যান তিনি।
গরুপাচার মামলা নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যেই বুধবার কলকাতা হাই কোর্টে অনুব্রত-কন্যার বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা পড়েছে। অভিযোগ— টেট না দিয়ে প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষিকার চাকরি পেয়েছেন অনুব্রতের মেয়ে সুকন্যা মণ্ডল। আদালতে অতিরিক্ত হলফনামা দিয়ে আইনজীবী ফিরদৌস শামিমের আরও অভিযোগ, শুধু সুকন্যাই নন, অনুব্রতের ভাই সুমিত-সহ ওই তৃণমূল নেতার ‘ঘনিষ্ঠ’ মোট ছ’জন টেট না দিয়েই চাকরি পেয়েছেন। এর পরেই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, সুকন্যা-সহ ছ’জনকে টেট পরীক্ষায় পাশ করার সার্টিফিকেট নিয়ে আদালতে হাজির হতে হবে। এবং সেটা বৃহস্পতিবার। তাঁদের আসার বিষয়টি নিশ্চিত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বীরভূম জেলার পুলিশ সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠীকে। হাই কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকেও দ্রুত নগেন্দ্রর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
যদিও সুমিতের বক্তব্য, তিনি আদালতে তলবের কোনও নির্দেশ হাতে পাননি। তিনি বলেন, ‘‘হাতে আইনি নোটিস আসেনি এখনও। এলে আইনি ভাবে লড়াই করব।’’ এর পাশাপাশি, অনুব্রতের ভাই দাবি করেন, তাঁর কাছে টেট পাশের শংসাপত্র রয়েছে। তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘আমি টেট না দিয়ে চাকরি পেয়েছি বলে সংবাদমাধ্যম এবং নেটমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার কাছে সব নথি রয়েছে এবং আমি কর্মরত। এ সব গুজব রটিয়ে আমার ভাবমূর্তিকে নষ্ট করার চেষ্টা হচ্ছে।’’
চক্রান্তের লিখিত অভিযোগ নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হলেও তা গ্রহণ করা হয়নি বলেই জানান সুমিত। তাঁর কথায়, ‘‘পুলিশের তরফে জানানো হয়, বিষয়টি হাই কোর্টে বিচারাধীন। তাই এই সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ গ্রহণ করা সম্ভব নয়।’’
নির্দেশ মেনে বৃহস্পতিবার হাই কোর্টে হাজিরা দিতে পারেন অনুব্রত-কন্যা সুকন্যা। সূত্রের খবর, সঙ্গে আইনজীবী সঞ্জীব দাঁ-কেও নিয়ে যাবেন তিনি। সুমিতের আইনজীবীও সঞ্জীব। বোলপুরে অনুব্রতের বাড়ির কাছে নিচুপট্টিরই বাসিন্দা সুমিত বৃহস্পতিবার ভোরে সুকন্যার সঙ্গে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দেবেন কি না, তা নিশ্চিত ভাবে জানা যায়নি। তবে অনুব্রতের ভাইয়ের ঘনিষ্ঠ সূত্রে দাবি, তিনি আদালতে হাজিরা দেবেন বলেই এখনও পর্যন্ত ঠিক রয়েছে।
এই খবর প্রথম প্রকাশের সময় সুমিত মণ্ডলের পরিচয় লেখা হয়েছিল, তিনি অনুব্রত মণ্ডলের ভাইপো। আসলে তিনি অনুব্রতের ভাই। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা দুঃখিত।