গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষ বন্দোবস্ত করা হয়েছে। —ফাইল চিত্র।
দোলের দিনে অনুব্রত মণ্ডলকে দিল্লির আদালতে হাজির করানোর জন্য আসানসোল থেকে কলকাতার যাত্রাপথে কড়া নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সশস্ত্র পুলিশের পাশাপাশি সঙ্গে থাকবেন চিকিৎসকও। থাকবে অক্সিজ়েন সিলিন্ডার-সহ চিকিৎসা সামগ্রীরও বন্দোবস্ত। সোমবার আসানসোল পুলিশ সূত্রে এমনই খবর।
গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষ বন্দোবস্ত করা হয়েছে। কেষ্টর নিরাপত্তায় আসানসোল থেকে কলকাতা পর্যন্ত পুলিশের ১ জন ইন্সপেক্টর ছাড়াও থাকবেন ৩ জন সাব-ইন্সপেক্টর। ওই পুলিশ আধিকারিকেরা-সহ ১২ জনের সশস্ত্র বাহিনী অনুব্রতকে কলকাতায় নিয়ে যাবে। সেখানে কলকাতা পুলিশেরও একই পদমর্যাদার পুলিশ আধিকারিকেরা থাকবেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
আসানসোল থেকে কী কী থাকবে কেষ্টর কনভয়ে? পুলিশ সূত্রে খবর, অনুব্রতর জন্য কনভয়ে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশের পক্ষ থেকে ১টি গাড়ি এবং ২টি পাইলট কার রাখা হয়েছে। সেগুলি অনুব্রতের গাড়ির সামনে ও পিছনে থাকবে। সেই সঙ্গে কনভয়ে অ্যাম্বুল্যান্সও থাকবে ১টি। তাতে আসানসোল জেলা হাসপাতালের এক চিকিৎসক এবং তাঁর এক সহযোগী থাকবেন। সঙ্গে অক্সিজেন সিলিন্ডার-সহ যাবতীয় চিকিৎসা সামগ্রীরও বন্দোবস্ত রাখা হবে। এর আগে বিধাননগরের এমএলএ-এমপি আদালতে এ ভাবেই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল অনুব্রতকে। তবে সে সময় তাঁর সঙ্গে কোনও চিকিৎসক বা অ্যাম্বুল্যান্সের বন্দোবস্ত ছিল না। তবে আদালত তাঁর চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয়গুলি উল্লেখ করায় এ বার চিকিৎসক ও অ্যাম্বুল্যান্সের বন্দোবস্ত করেছেন আসানসোল জেল কর্তৃপক্ষ। আসানসোল থেকে সকাল ৬টার সময় বার করা হবে অনুব্রতের এই ‘কনভয়’। তাঁকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার সময় নিরাপত্তার বিষয়ে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশের পাশাপাশি পশ্চিম বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে আলোচনা করেছেন আসানসোল সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ।
আসানসোল থেকে কলকাতার জোকা ইএসআই হাসপাতালে অনুব্রতর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানোর পর তাঁকে দিল্লির আদালতে হাজির করানোর কথা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) আধিকারিকদের। ইএসআই হাসপাতালে স্বাস্থ্যপরীক্ষা করানোর পর সেখান থেকেই চিকিৎসক এবং তাঁর সহযোগীকে সঙ্গে নিয়ে অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যাবে ইডি। এর পর তাঁকে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে হাজির করানো হবে। তাঁকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে গরু পাচারকাণ্ডের তদন্ত শুরু চালাতে চায় ইডি।
ইডির করা মামলায় অনুব্রতর প্রাক্তন দেহরক্ষী সহগল হোসেন-সহ এই মামলায় প্রধান অভিযুক্ত এনামুল হক দিল্লির তিহাড় জেলে রয়েছেন। সেখানে এঁদের মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ইডি সূত্রে খবর।
ইডি সূত্রে দাবি, গরু পাচারকাণ্ডের তদন্ত যত দ্রুত সম্ভব শেষ করা হোক, এমনই চাইছে আদালত। এই তদন্তে সিবিআই যে সমস্ত তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে, সেগুলিরও কাজে লাগাতে চান ইডির তদন্তকারীরা।