সিউড়ি ২ ব্লকে তৃণমূলের সভা। নিজস্ব চিত্র
সরকারি আবাস যোজনা জন্য কেউ টাকা নিলে ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। রবিবার পুরন্দরপুরে একটি চালকলের ভিতরে তৃণমূলের সিউড়ি ২ ব্লক কমিটির সদস্যদের নিয়ে একটি আলোচনাসভা হয়। সেখানেই তিনি দলের অঞ্চল সভাপতি ও পঞ্চায়েতের প্রধানকে এই হুঁশিয়ারি দেন।
অনুব্রত বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ কে কী দল করে তা দেখবে না। তাঁদের বাড়ি দেবে। দয়া করে বাড়ি থেকে কোন পয়সা নেবে না। আর যদি পয়সা নাও তাহলে ব্লক সভাপতিকে বলে যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেব।’’ তবে অনুব্রতর এই বক্তব্যকে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির জেলা সভাপতি শ্যামাপদ মণ্ডল। তাঁর কথায়, ‘‘এরকম কথা উনি আগেও বহুবার বলেছেন। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি। এটা কেবল মানুষের চোখে ধুলো দেওয়া ছাড়া কিছুই নয়।’’
এ দিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেন অনুব্রত। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং অমিত শাহ বলেছেন যে, মুখ্যমন্ত্রী দু’টাকা কেজি যে চাল দেন তা নাকি কুকুর-ছাগলে খায়। পদাধিকারীরা এই কথা বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করুন।’’ যদিও অনুব্রত কথার ভুল ব্যাখ্যা করছেন বলে দাবি করেছেন শ্যামাপদ। তাঁর কথায়, ‘‘অনুব্রত মণ্ডল আমাদের নেতার কথার ভুল ব্যাখ্যা করছেন। ওঁরা কেবল বলতে চেয়েছেন যে মুখ্যমন্ত্রী দেওয়া চাল নিম্নমানের।’’
এ দিনের সভা থেকে জেলার সমস্ত অঞ্চলে পর্যবেক্ষক নিয়োগের কথা ঘোষণা করেন অনুব্রত। মূলত করোনা সংক্রমণের কারণে মিটিং, মিছিল, জনসভা করা সম্ভব নয়। তাই জনসংযোগ অব্যাহত রাখতে প্রত্যেক বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। সেই মতো এই পর্যবেক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত বলে দলের অনেকের মত।
তবে, লকডাউন চলাকালীন তৃণমূল কীভাবে ওই সভা করল সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শ্যামাপদ। তাঁর অভিযোগ, ‘‘এটা যদি বিজেপি করত তাহলে তো পুলিশ অনুমতি দিত না।’’ অন্যদিকে তৃণমূল নেতাদের পাল্টা দাবি, ‘‘ওটা কোনও সভা বা মিটিং-মিছিল হয়নি। কেবল সিউড়ি ২ ব্লক কমিটির সদস্যদের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ করে এলাকার খোঁজ খবর নিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। সেই কর্মসূচিও হয়েছে একটি চালকলের ভিতরে।’’ তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি অভিজিৎ সিংহের কথায়, ‘‘ওটা কোনও সভা নয়। শুধুমাত্র পদাধিকারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা হয়েছে। তাও সকলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মুখে মাস্ক পরে একে একে এসেছিলেন।’’