কলেজে কলেজে ছাত্র সংসদের নির্বাচন ঘিরে নিজেদের মধ্যেই সংঘর্ষে মেতেছে শাসক দলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমফিল স্তরে ভর্তিতে অনিয়মের অভিযোগকে কেন্দ্র করেও মুখোমুখি সংঘাতে ওই সংগঠনের দু’টি গোষ্ঠী।
অভিযোগটা মূলত যোগ্য প্রার্থীকে বঞ্চিত করে অন্যদের সুযোগ দেওয়াকে ঘিরেই। এমন অভিযোগ ওঠে অনেক সময়েই। তবে এ ক্ষেত্রে বিষয়টি বাড়তি মাত্রা পাচ্ছে অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারীরা একই দলের সমর্থক হওয়ায়। অভিযোগ উঠেছে, যোগ্যদের বাদ দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের বিদায়ী কমিটির ন’জনকে বাংলা বিভাগে এমফিলে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারীদের সকলেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বা টিএমসিপি-র সমর্থক। বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে টিএমসিপি-র দুই গোষ্ঠীর লড়াই তীব্র হয়েছে।
বাংলা বিভাগে এমফিলে ভর্তির ক্ষেত্রে এই অনিয়মের তদন্ত করার জন্য সোমবার দাবিপত্র জমা পড়েছে উপাচার্য আশুতোষ ঘোষের কাছে। উপাচার্য জানান, তিনি অভিযোগ পেয়েছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন। এই ডামাডোলে এ দিন বাতিল হয়ে গিয়েছে এই বিষয়ের মৌখিক পরীক্ষা।
বাংলা বিভাগে এমফিলে ভর্তি-পরীক্ষার ফল গত সপ্তাহে প্রকাশিত হয়েছে। অভিযোগ, সফল ৩৫ জনের মধ্যে ন’জনই টিএমসিপি-র সমর্থক এবং বিদায়ী ছাত্র সংসদের সদস্য। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি-র নিয়ম অনুযায়ী তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং ওবিসি প্রার্থীরা অকৃতকার্য হলেও মৌখিক পরীক্ষায় তাঁদের ডাকতে হয়। সেই নিয়মবিধিও মানা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।
মাঠে নেমেছে এসএফআই-ও। এই অভিযোগ নিয়ে পোস্টার লাগিয়েছে তারা। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সোহম মুখোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘এমন ঘটনা এই প্রথম নয়। বারবার ঘটছে। এ বিষয়ে তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে উপাচার্যের কাছে।’’ সম্প্রতি বাংলার শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে ওই বিভাগ থেকেই প্রভাব খাটানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। শিক্ষক নিয়োগের ইন্টারভিউ বোর্ডে থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েও শেষ পর্যন্ত সরিয়ে দেওয়া হয় অধ্যাপক অমিত্রসূদন ভট্টাচার্যকে। এমফিলে প্রার্থী বাছাইয়ে দুর্নীতির অভিযোগের পরে মৌখিক পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়। বিভাগীয় প্রধান সনৎ নস্কর অবশ্য জানান, বাইরের পরীক্ষক সময় দিতে পারেননি বলে পরীক্ষা স্থগিত রাখা হয়েছে।