এই সব ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন অনাথ ও বৃদ্ধাশ্রমে।
সরকারি সহযোগিতা মেলেনি। চেয়ে চিনতে খাবার সংগ্রহ করছিল অনাথ আশ্রমের আবা কিসিকেরা। ফেসবুকের মাধ্যমে জেলার করোনা পরিস্থিতিতে এমন অসহায় অবস্থার কথা জেনে ওই সব অসহায় ছেলেমেয়ে এবং বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের সাহায্যে এগিয়ে এলেন পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরের এক প্রবাসী মহিলা বিজ্ঞানী।
চণ্ডীপুরের কান্ডপসরা গ্রামের বাসিন্দা মিতা মাইতি নামে ওই বিজ্ঞানী মার্কিন মুলুকের একটি ক্যানসার নিরাময় এবং ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থায় কর্মরত। তাঁর হাত ধরেই কাঁথির অনাথ আশ্রম এবং বৃদ্ধাশ্রমগুলিতে পৌঁছে যাচ্ছে চাল-আলু, পেঁয়াজ, সরষের তেল, সয়াবিন-সহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী। স্থানীয় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে প্রবাসী ওই বিজ্ঞানর সাহায্য পৌঁছে যাচ্ছে আশ্রমগুলিতে। ওই সংস্থার তরফেই ফেসবুকে জেলার অনাথ আশ্রমগুলিতে করোনা পরিস্থিতিতে আবাসিকদের অসহায় অবস্থার কথা তুলে ধরা হয়েছিল।
করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন চলাকালীন কার্যত অসহায় ভাবে দিন কাটাতে হচ্ছে খেজুরির কৃষ্ণনগর কিংবা মহিষাদলের দেউলপোতা অনাথ আশ্রমের আবাসিকদের। প্রবাসী ওই বিজ্ঞানীর দাবি, ‘‘ফেসবুকে নিজের জন্মভূমি পূর্ব মেদিনীপুরের কয়েকটি অনাথ আশ্রমের দুরবস্থার কথা জানতে পারি। তারপরেই ওই অসহায় ছেলেমেয়ে এবং বৃদ্ধবৃদ্ধাদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ তিনি জানান, করোনা পরিস্থিতি যতদিন না স্বাভাবিক হবে, ততদিন ওই অসহায়দের পাশে থাকবেন।
লকডাউন চলাকালীন আবাসিকদের দুবেলা পেট ভরে খাওয়ানোয় কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলার একাধিক আশ্রম কর্তৃপক্ষ। কাঁথির ফরিদপুর লোকশিক্ষা নিকেতন পরিচালিত বৃদ্ধাশ্রমের সম্পাদক গৌতম শাসমল বলেন, ‘‘১৬ জন আবাসিক রয়েছেন। সরকারি সহযোগিতা মিলছে ঠিক। তবে সারা বছর যাঁরা পাশে থাকতেন, এখন তাঁদের অনেকেই অনিশ্চয়তার সম্মুখীন। তাই দুশ্চিন্তা হচ্ছিল। আমেরিকা প্রবাসী জেলার মহিলা বিজ্ঞানীর সহযোগিতা উপকারে লেগেছে।’’ ইতিমধ্যে দেশপ্রাণ ব্লকের তপোবন অনাথ আশ্রম, খেজুরির পূর্ব চড়া, নন্দীগ্রামে পৌঁছে গিয়েছে ২ বস্তা চাল, ২ বস্তা আলু, এক পেটি ডিম, সয়াবিন এবং ১৫ কেজি সরষের তেল।
কী ভাবে এলাকায় পৌঁছে যাচ্ছে বিজ্ঞানীর সাহায্য!
চণ্ডীপুরের ওই স্বেচ্ছেসেবী সংস্থার তরফে প্রতীক জানা বলেন, ‘‘ওই বিজ্ঞানীর পরিবারের লোকেরা স্থানীয় বাজার থেকে সমস্ত সামগ্রী কিনে আমাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন। এরপর প্রকৃত অসহায় অনাথ এবং বৃদ্ধাশ্রমগুলির খোঁজখবর নিয়ে ওই সব সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।’’