ফাইল চিত্র।
৩০ ও ৩১ জানুয়ারি রাজ্য সফরে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই সফরের প্রথম দিনই উত্তর ২৪ পরগনার ঠাকুরনগরে সভা করবেন তিনি। সেই কর্মসূচির জন্য হাতে অনেকটা সময় থাকলেও সোমবারই প্রস্তুতি শুরু করে দিচ্ছে বিজেপি। সোমবার দুপুরেই ঠাকুরনগরে যাচ্ছেন রাজ্য বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়।
নীলবাড়ির লড়াইয়ে বিজেপির কাছে বড় ভরসা মতুয়া ভোট। দলের হিসেবে প্রায় ৩০টি বিধানসভা আসনের ফলাফল এদিক-ওদিক করে দিতে পারেন গুরু হরিচাঁদ ঠাকুরের অনুগামীরা। আর তার মধ্যে ১৪টি আসনই রয়েছে বিজেপির জেতা বনগাঁ ও রানাঘাট লোকসভা এলাকাতেই। দুই আসন মিলিয়ে লোকসভা নির্বাচনের ফল অনুযায়ী ১২টি আসনে এগিয়ে বিজেপি। তবে শুধু এই এলাকাই নয়, রাজ্যে যেখানে যত মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন তাঁদের শ্রদ্ধা কেন্দ্র ঠাকুরনগর। সেই ঠাকুরনগরেই যাবেন অমিত।
রাজ্য বিজেপি সূত্রে খবর, বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের দাবি মেনেই এই সভা করতে যাচ্ছেন অমিত। লোকসভা নির্বাচনে মতুয়া ভোট পদ্মফুলের দিকে এসেছিল মূলত নাগরিকত্ব ইস্যুতে বিজেপি-র প্রতিশ্রুতি কেন্দ্র করেই। কিন্তু দ্বিতীয় নরেন্দ্র মোদী সরকারের দেড় বছর কেটে গেলেও দেশে এখনও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) কার্যকর হয়নি। এ নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয় মতুয়াদের মধ্যে। ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন শান্তনুও। বনগাঁর সাংসদ এমনটাও বলেন যে, তাঁর কাছে আগে মতুয়া স্বার্থ। পরে বিজেপি। রাজ্যে এসে কেন সিএএ কার্যকর হয়নি তার ব্যাখ্যা দিয়ে অমিত শাহ বলেছিলেন, ‘‘করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এত বড় অভিযান করা সম্ভব নয়। কেবল বিধি প্রণয়নই বাকি আছে। করোনাভাইরাসের টিকা এসে গেলে এবং করোনার শৃঙ্খল (সাইক্ল) ভেঙে গেলে আমরা এই বিষয়ে ভাবব।’’ এর পরেও শান্তনু বলেন, অমিতকে স্বয়ং ওই ব্যাখ্যা দিতে হবে মতুয়াদের সামনে।
আরও পড়ুন: নীলবাড়ির লক্ষ্যে গেরুয়া রথ বঙ্গে, পাঁচ যাত্রার শেষে মেগা সমাবেশ
মতুয়া মন পেতে তখন থেকেই সক্রিয় হয় বিজেপি। শান্তনুর দাবি মতো বনগাঁ লোকসভা এলাকাকে আলাদা ‘সাংগঠনিক জেলা’ বলে ঘোষণা করা হয়। আগে বনগাঁ বারাসত সাংগঠনিক জেলার মধ্যেই ছিল। নতুন বনগাঁ জেলা গঠন করার পাশাপাশি তার সভাপতি হিসেবে শান্তনুর ‘ঘনিষ্ঠ’ মানসপতি দেবের নামও ঘোষণা করা হয়। এর পরেই মান ভাঙে শান্তনুর। এ বার অমিত যাচ্ছেন ঠাকুরনগরে।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর মুখ নিয়ে মন্তব্য নয়, নেতাদের কড়া বার্তা বিজেপির
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, ঠাকুরনগরে সমাবেশ ছাড়াও মতুয়াগুরু হরিচাঁদ ঠাকুরের মন্দিরে পুজো দিতে পারেন অমিত। সেই সঙ্গে কোনও মতুয়া পরিবারে মধ্যাহ্নভোজনের পরিকল্পনাও রয়েছে। সোমবার সেই সবের পরিকল্পনা সারতেই ঠাকুরনগরে যাচ্ছেন কৈলাস ও মুকুল।