রাজ্য শিক্ষায় পিপিপি মডেল চালু করার পরিকল্পনার প্রতিবাদে এসএফআই-এর মিছিল ও অবরোধ। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যে স্কুল শিক্ষায় পিপিপি মডেল চালুর পরিকল্পনা নিয়ে চলতি বিতর্কের মাঝেই এ বার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানালেন, বিষয়টি তাঁর জানা নেই। সরকারি নীতির বিষয় মুখ্যমন্ত্রীর অভিমতের উপরে নির্ভরশীল। পিপিপি চালু করার নির্দেশিকা প্রকাশ্যে আসার পরে প্রতিবাদ শুরু হতেই শিক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা বিষয়টি অস্বীকার করেছিলেন। যদিও শিক্ষামন্ত্রী সরকারি নীতির কথা বলে আলোচনার কোর্টে বল রেখে দিয়েছেন।
প্রস্তাবিত পিপিপি মডেলের প্রতিবাদে শনিবারই রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছে এসএফআই। গোলপার্ক থেকে এ দিন তাদের প্রতিবাদ মিছিল ছিল হাজরা মোড় পর্যন্ত। মিছিলের পরে হাজরা মোড় অবরোধ করে পিপিপি মডেল সংক্রান্ত নির্দেশিকার প্রতিলিপি পোড়ান ছাত্র-ছাত্রীরা। সিপিএমের ছাত্র সংগঠনের আশঙ্কা, এই মডেল কার্যকর হলে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীদের বেতন বা পেনশনের দায়িত্ব নেবে না রাজ্য সরকার। থাকবে ব্যাপক ফি বৃদ্ধির আশঙ্কা। এমনকি, স্কুলে মাতৃভাষায় পড়াশোনার অধিকার থাকবে কি না, তারও নিয়ন্ত্রক হবে বেসরকারি সংস্থা। এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য ঘোষণা করেছেন, এমন পরিকল্পনার বিরুদ্ধে রাজ্য জুড়ে সই সংগ্রহ করে আগামী ১ মার্চ রাজভবন অভিযান করবেন তাঁরা।
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যবাবু অবশ্য বলেছেন, পিপিপি মডেল নিয়ে কেন এত চর্চা হচ্ছে, তা তিনি জানেন না! ওই খসড়ার একটিও তিনি এখনও দেখেননি। দেখবেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘শিক্ষা দফতরে অন্তত এই ধরনের কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা সরকারি নীতি। মুখ্যমন্ত্রীর অভিমতের উপরে নির্ভর করছে। তাঁর সঙ্গে এই বিষয়ে আমার কোনও আলোচনা হয়নি।’’
কিছু দিন আগে যে পিপিপি মডেলের যে খসড়া প্রকাশ্যে এসেছিল, তাতে কোনও সই ছিল না। পরে আবার সই করা একটি খসড়াও পাওয়া গিয়েছে, এসএফআই নেতৃত্ব তা জনসমক্ষে দেখিয়েওছেন। এই প্রসঙ্গে ব্রাত্যবাবুর বক্তব্য, সামাজিক মাধ্যমে এই ধরনের উদ্যোগের পিছনে রাজনীতি থাকে, বিরোধিতা থাকে, বিভ্রান্তি ছড়ানোর প্রয়াস থাকে। মন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘তা হলে কি আমরা পিছিয়ে যাব? নতুন কোনও কিছু করব না? গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কেউ মিছিল করতেই পারেন।’’ সামাজিক মাধ্যমে যদি ‘মিথ্যা প্রচার’ হয়ে থাকে, তা হলে কি তাঁরা পুলিশের কাছে যাবেন? শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য, ‘‘ভাল প্রস্তাব। ভেবে দেখা হবে।’’