কলকাতা মেট্রো। —ফাইল চিত্র।
অতিমারি পরিস্থিতির পরে প্রায় দেড় বছর কেটে গেলেও উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর যাত্রী-সংখ্যা এখনও কোভিড-পূর্ববর্তী অবস্থায় ফেরেনি। তবে, আশা জাগাচ্ছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো। গত বছরের জুলাইয়ে ওই মেট্রো শিয়ালদহ পর্যন্ত সম্প্রসারিত হওয়ার পরে যাত্রী-সংখ্যা বেড়েছে চমকে দেওয়ার মতো হারে। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মধ্যে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় ৩৬ লক্ষ ৯৭ হাজার যাত্রী সফর করেছেন। দৈনিক যাত্রী-সংখ্যা ঘোরাফেরা করছে গড়ে ৪০ হাজারের আশপাশে। প্রসঙ্গত, সোম থেকে শনিবার পরিষেবা চালু থাকে ওই মেট্রোয়।
গত বছর জুন এবং জুলাই মাসে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় যাত্রী-সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৬১ হাজার এবং ৫ লক্ষ ৩০ হাজার। চলতি বছরে ওই একই সময়সীমায় যাত্রী-সংখ্যা যথাক্রমে ৯ লক্ষ ১৬ হাজার এবং ১০ লক্ষ ৯ হাজার ছুঁয়েছে। এই প্রসঙ্গে মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, ‘‘সল্টলেককে এখন কলকাতার দ্বিতীয় অফিসপাড়া বলা যায়। অটো এবং বাসের তুলনায় মেট্রোয় যাতায়াত অনেক সাশ্রয়ী এবং স্বচ্ছন্দ হওয়ার কারণে যাত্রী বাড়ছে। পাশাপাশি, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় টিকিট কাটার ক্ষেত্রে যাত্রীদের একাংশের কাছে কিউআর কোড বিশেষ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।’’
বছরের শেষে এসপ্লানেড এবং হাওড়া ময়দানের মধ্যে ইস্ট-ওয়েস্টের পরিষেবা চালু করে দেওয়ার জন্য জোর তৎপরতা চলছে। ওই অংশে মেট্রো পরিষেবা শুরু হলে সেখানেও যথেষ্ট যাত্রী মিলবে বলে আশাবাদী কর্তৃপক্ষ। সে ক্ষেত্রে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোকে ছাপিয়ে হাওড়া ময়দান থেকে সেক্টর ফাইভ পর্যন্ত পথে যাত্রী-সংখ্যা এবং পরিষেবার নিরিখে কলকাতার এক নম্বর মেট্রো হয়ে উঠতে পারে ইস্ট-ওয়েস্ট। যদিও পুরো পথে পরিষেবা শুরু হতে এখনও অন্তত দেড় বছর অপেক্ষা করতে হবে বলে সূত্রের খবর।
উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোয় যাত্রী-সংখ্যা আশানুরূপ জায়গায় না এলেও অতিমারি পরিস্থিতির পরে শিয়ালদহে লোকাল ট্রেনের দৈনিক যাত্রী-সংখ্যা প্রাক্-অতিমারি পর্বে ফিরেছে। মূলত লোকাল ট্রেনের ভাড়া অন্য সব পরিবহণের চেয়ে অনেকটা কম থাকার কারণেই এটা সম্ভব হয়েছে বলে ওয়াকিবহাল মহলের অনুমান। তুলনায় যাত্রী কমেছে সরকারি এবং বেসরকারি বাসে। সরকারি বাসের ভাড়া না বাড়লেও আর্থিক কারণে রুট এবং ট্রিপের সংখ্যা কমে আসাকে এর অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। বরং, মাঝের সময়ে অনেকটাই বেড়েছে বাস ও অটোর ভাড়া।
করোনা পরিস্থিতির পরে ধাক্কা খেয়েছে ব্যবসা এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্র। প্রাক্-অতিমারি পর্বে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর দৈনিক যাত্রী-সংখ্যা ছিল সাড়ে ছ’লক্ষের কাছাকাছি। তখনও দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত মেট্রোপথ সম্প্রসারিত হয়নি। তা হওয়ার পরে মেট্রো কর্তৃপক্ষ আশা করেছিলেন, দৈনিক যাত্রী-সংখ্যা সাত লক্ষের কাছাকাছি গিয়ে দাঁড়াবে। কিন্তু বাস্তবে উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোয় দৈনিক যাত্রী-সংখ্যা এখনও ঘোরাফেরা করছে সেই ছ’লক্ষের কাছাকাছিই। তবে মেট্রো কর্তৃপক্ষ মনে করছেন, পুজো এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রী-সংখ্যা বেশ খানিকটা বাড়বে।