বিমল গুরুং। —ফাইল চিত্র।
সপ্তমীর দিন দিল্লিতে গোর্খা সমস্যা নিয়ে ডাকা বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সামনে কার্যত একতরফা ভাবে রাজ্যের বিরুদ্ধে নালিশের পাহাড় নামাল বিজেপি ও তার সহযোগী দলগুলি। পাহাড়ের কোনও বিরোধী দলকে এই বৈঠকে ডাকা হয়নি বলেই দাবি। এমন একটি বৈঠকে পাহাড়ে গণতন্ত্রের অভাব রয়েছে বলে বিজেপি ও সহযোগীদের তরফে দাবি করা হয়। তবে এর মধ্যেই পাহাড়ের ১১টি জনজাতিকে তফসিলি জনজাতি (এসটি) মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি যে কাঁটার মতো বিজেপি ও সহযোগী দলগুলিকে বিঁধে রয়েছে, তা-ও পরিষ্কার হয়ে যায়। বস্তুত, এটি এমনই একটি বিষয়, যা নিয়ে আলোচনা উঠলে গেরুয়া শিবির যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়ে। এ দিন অমিত শাহকে সেই কথাই জানিয়েছেন উপস্থিতি প্রতিনিধিরা।
ঠিক হয়েছে, পরের বৈঠক হবে নভেম্বরে, দেওয়ালির পরে। রাজ্যের তরফে এ দিন উপস্থিত ছিলেন দিল্লিতে পশ্চিমবঙ্গের রেসিডেন্ট কমিশনার। বৈঠকের পরে দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা জানান, পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে পরের বৈঠকের জন্য উচ্চপদস্থ এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে, এমন কাউকে পাঠাতে বলা হয়েছে।
পাহাড়ে এখন বিজেপির দুই বিধায়ক এবং অনীত থাপার দলের এক জন বিধায়ক রয়েছেন। সাংসদ বিজেপির। এ দিনের বৈঠকে কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু প্রতিমন্ত্রী জন বার্লা এবং কালচিনির বিধায়ক বিশাল লামা থাকলেও কালিম্পঙের বিধায়ক রুদেন লেপচাকে ডাকা হয়নি বলে অভিযোগ। এঁদের সঙ্গে ছিলেন জিএনএলএফ, জিআরএনএম, পাহাড় বিজেপি, গোর্খা লিগের একটি অংশের নেতারা। কিন্তু অনীত থাপা বা বিমল গুরুং ডাক পাননি বলেই জানিয়েছেন। গুরুং অবশ্য বৈঠক নিয়ে বরাবরই বলছেন, ‘‘বিজেপির সঙ্গে ১১ বছর ধরে ঘর করেছি। ওরা পাহাড়ের জন্য কিছুই করবে না। সবই ভাঁওতা।’’ এই ক্ষেত্রে বিমল তো বটেই, পাহাড়ের বাকি বিরোধী নেতারাও ১১ জনজাতিকে তফসিলি জনজাতি মর্যাদা দেওয়ার প্রসঙ্গটি তুলছেন। এই নিয়ে রাজ্য বহু আগেই প্রস্তাব পাঠিয়ে দিয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র কিছুই করেনি বলে অভিযোগ।
এ দিন বৈঠকের পরে রাজু বিস্তাও কার্যত এই অস্বস্তির কথা মেনে নেন। তবে এই নিয়ে অমিত শাহ কোনও আশ্বাস দিয়েছেন কিনা, তা তিনি সবিস্তারে বলেননি। রাজু আরও জানান, পাহাড়ে জিটিএ-সহ বিভিন্ন স্তরে যে দীর্ঘদিন ভোট হচ্ছে না, সেই বিষয়টি অমিত শাহকে জানানো হয়েছে। বিজেপি ও সহযোগী দলগুলি দাবি করে, ২০১৭ সাল থেকে জিটিএ-র ক্ষমতা দখল করে রেখেছে তৃণমূল বা তাদের সহযোগীরা। একই সঙ্গে এ দিন দার্জিলিং পৌঁছে জিটিএ-র বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় বার্তা দেন রাজ্যপালও। তিনি জানান, দীর্ঘদিন অডিট হয়নি পাহাড়ে। এর পরে অডিট হবে। এবং যারা টাকা নয়ছয় করেছে, তারা কেউ ছাড় পাবে না।