বাইক আরোহীর মৃত্যুতে পুলিশের বিরুদ্ধে অমানবিক আচরণের অভিযোগ উঠল হুগলির হরিপালে। প্রতীকী ছবি।
গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন এক মোটরবাইক আরোহী। ‘নাকা চেকিং’-এ আটকে পড়ে পুলিশের কাছে জল চেয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ কর্ণপাত করেনি বলে অভিযোগ। কিছু ক্ষণের মধ্যে বাবুসোনা পাড়ুই (৪৬) নামে ওই বাইক আরোহীর মৃত্যুতে পুলিশের বিরুদ্ধে অমানবিক আচরণের অভিযোগ উঠল হুগলির হরিপালে।
রবিবার দুপুরের এই ঘটনা হরিপালের নালিকুল বটতলার। প্রতিবাদে ১২টা থেকে প্রায় দু’ঘণ্টা তারকেশ্বর-বৈদ্যবাটী রোডে বাবুসোনার দেহ রেখে অবরোধ করেন স্থানীয়েরা। মৃতের বাড়ি নালিকুলের গুসকুড়ায়। দুই মেয়েও ঘটনার সময়ে বাবুসোনার সঙ্গে ছিল। বড় মেয়ে অনুষ্কা বলে, ‘‘বাবা পুলিশের কাছে খাবার জল চেয়েছিল। দিল না। ওই পুলিশকর্মীদের কঠোর শাস্তি চাই।’’ স্থানীয় দোকানদাররাও জানিয়েছেন, ওই বাইক আরোহী পুলিশের কাছে কয়েকবার জল চান। কিন্তু পুলিশ দেয়নি।
জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার আমনদীপ বলেন, ‘‘পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হবে। কোনও পুলিশকর্মী দায়ী হলে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ করা হবে। ওই বাইক আরোহীর মাথায় হেলমেট ছিল না। সম্ভবত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন বেলা ১১টা নাগাদ বাবুসোনা দুই মেয়েকে আঁকার স্কুল থেকে নিয়ে বাইকে বাড়ি ফিরছিলেন। নালিকুল বটতলায় পুলিশের ‘নাকা চেকিং’ চলছিল। বাবুসোনার মাথায় হেলমেট না-থাকায় পুলিশ আটকায়। বাবুসোনা তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান। পুলিশকর্মীদের সঙ্গে কথা বলতে বলতেই তিনি অসুস্থ বোধ করেন। দুই মেয়েও বাবাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য পুলিশের কাছে অনুরোধ জানাতে থাকে। এর মধ্যেই কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের কাছে বাবুসোনা জল চান। কিন্তু পাননি বলে অভিযোগ।
অবস্থার অবনতি হলে স্থানীয় দোকানদাররা বাবুসোনাকে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যান। চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এর পরেই পুলিশের বিরুদ্ধে জুলুম ও অমানবিক আচরণের অভিযোগে অবরোধ শুরু হয়।
বাবুসোনার বড় মেয়ে বলে, ‘‘বারবার বাবা পুলিশকে বলছিল, বিনা হেলমেটে আর বের হবে না। পুলিশ কিছু শুনলই না।’’