Internal Conflict

গড়িয়াহাটে ব্যবসায়ীকে কোপ অস্ত্রের, ফের গোষ্ঠী সংঘর্ষ তৃণমূলের

আহত রকি রাজবংশী নামের যুবক ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রবিবার রাতের ঘটনায় পুরপ্রতিনিধি সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ওয়ার্ড সভাপতি অজয় মুখোপাধ্যায়ের কোন্দলের বিষয়টি মঙ্গলবার সামনে এসেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৬:৩৭
Share:
গভীর রাতে যুবককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে এসে তাঁর বাঁ হাতের একাধিক জায়গায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয় বলে অভিযোগ।

গভীর রাতে যুবককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে এসে তাঁর বাঁ হাতের একাধিক জায়গায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয় বলে অভিযোগ। —প্রতীকী চিত্র।

কলকাতা পুরসভার দুই ও তিন নম্বর ওয়ার্ডের সংযোগস্থলের দমদম এলাকা এবং
গড়িয়াহাটের কাঁকুলিয়া রোড। পর পর দু’দিন তৃণমূলের বিভিন্ন গোষ্ঠীর সংঘর্ষের জেরে উত্তপ্ত হয়ে উঠল শহরের দুই প্রান্ত। রবিবার গভীর রাতে এক যুবককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে এসে তাঁর বাঁ হাতের একাধিক জায়গায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয় বলে অভিযোগ। আহত রকি রাজবংশী নামে ওই যুবক ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রবিবার রাতের এই ঘটনায় পুরপ্রতিনিধি সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে ওয়ার্ড সভাপতি অজয় মুখোপাধ্যায়ের কোন্দলের বিষয়টি মঙ্গলবার সামনে এসেছে।

সোমবার সন্ধ্যায় উত্তর কলকাতার দমদমে দুই এবং তিন নম্বর ওয়ার্ডের সংযোগস্থলে খোদ মেয়রের সামনেই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বেধেছিল। ঘটনায় তিন জনের মাথাও ফাটে।

রবিবার রাতের ঘটনার ক্ষেত্রে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গড়িয়াহাটের কাঁকুলিয়া রোডের একাংশ ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত। অভিযোগ, কাঁকুলিয়া রোডের বাসিন্দা নয়ন সমাদ্দার (ভোলা), রোহিত প্রসাদ (পিঙ্কু) এবং সোনু হালদার (জিশু) নামে তিন যুবক
রবিবার রাত দুটো নাগাদ স্থানীয় বাসিন্দা রকি রাজবংশীকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আসে। রকির পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে বাঁ হাতের বিভিন্ন অং‌শে পর পর কোপানো হলে ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরিয়ে ভেসে যায় রাস্তা। তাঁর চিৎকারে স্থানীয় বাসিন্দারা
ছুটে এসে রকিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। অভিযোগ, ‘অভিযুক্ত’ তিন জনই ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধির অনুগামী।

মঙ্গলবার কাঁকুলিয়া রোডে গিয়ে দেখা গেল, পুরপ্রতিনিধি সুদর্শনা মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে
একাধিক পোস্টার পড়েছে। যদিও এ প্রসঙ্গে সুদর্শনাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘দুই গোষ্ঠী মত্ত অবস্থায় একে অন্যের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়েছে। এই ঘটনার
সঙ্গে আমার বা দলের বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই।’’ স্থানীয় সূত্রের খবর, আহত যুবক রকি ওয়ার্ড সভাপতি অজয় মুখোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ। যদিও অজয়ের কাছে এ প্রসঙ্গে জানতে
চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘‘দু’টি গোষ্ঠীর সংঘর্ষের সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই।’’

পেশায় কেব‌্‌ল ব্যবসায়ী রকির উপরে আগেও আক্রমণ এসেছে বলে অভিযোগ। স্থানীয়েরা জানান, গত নভেম্বরে জগদ্ধাত্রী পুজোর সময় থেকে রকির সঙ্গে ভোলা, পিঙ্কু ও জিশুদের সংঘাতের সূত্রপাত। অভিযোগ, জগদ্ধাত্রী প্রতিমা বিসর্জনের দিন বোমা ছোড়া ঘিরে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে গোলমাল বাধে। তার পর থেকে সেই সূত্র ধরে দু’পক্ষের মাঝেমধ্যেই ঝামেলা হচ্ছিল।
রবিবার রাত থেকে পরিস্থিতির অবনতি হয়। অভিযোগ, ভোলা, পিঙ্কু, জিশুরা গড়িয়াহাট মোড়ের কাছে রকিকে ডেকে নিয়ে এসে ধারালো ছুরি দিয়ে তাঁর বাঁ হাতে বার বার
এমন ভাবে কোপায় যে মাংস কেটে যায়। রাস্তা রক্তে ভেসে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা রকিকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। তাঁর বাঁ হাতে একাধিক সেলাই হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। ভোলা, পিঙ্কু ও জিশুর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তবে এই ঘটনায় মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন