TMCP

অধ্যক্ষকে কুকথা নেতার, বিতর্ক

কলেজের একাংশ প্রথম সিমেস্টারের পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ, নাম নথিভুক্তির সময় কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে তাঁদের আবশ্যিক বিষয় বাংলার পরিবর্তে ইংরেজি হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:১৮
Share:

ঘটনার ভিডিয়ো ছড়াতেই শোরগোল পড়েছে। ফাইল চিত্র।

শিক্ষাঙ্গনে নানা অশান্তিতে বার বার নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি-র। এ বারে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে দুরমুঠ দেশপ্রাণ মহাবিদ্যালয়ে স্মারকলিপি দিতে গিয়ে অধ্যক্ষকের প্রতি অশালীন মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছে টিএমসিপি নেতা আবেদ আলি খানের বিরুদ্ধে। ঘটনার ভিডিয়ো ছড়াতেই শোরগোল পড়েছে। যদিও শুক্রবারের সেই ঘটনা নিয়ে আবেদের দাবি, ‘‘একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। প্রতিবাদ করায় আমাকে আগেও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা হয়েছে। আবারও চেষ্টা চলছে।’’

Advertisement

কলেজের একাংশ প্রথম সিমেস্টারের পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ, নাম নথিভুক্তির সময় কলেজ কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে তাঁদের আবশ্যিক বিষয় বাংলার পরিবর্তে ইংরেজি হয়েছে। অ্যাডমিট কার্ডও সেই মতোই এসেছে। তারই প্রতিবাদে অধ্যক্ষের কাছে শুক্রবার স্মারকলিপি দিতে যান ছাত্রছাত্রীরা। তবে অধ্যক্ষ স্মারকলিপি নিতে চাননি বলে দাবি। সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ওই মুহূর্তের ভিডিয়োয় (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) দেখা যাচ্ছে, অধ্যক্ষ সুবিকাশ জানা চেয়ারে বসে রয়েছেন। পাশে দাঁড়িয়ে কলেজের কোষাধ্যক্ষ সৌম্য মাইতি। তাঁদের সামনে দাঁড়িয়ে বেশ কিছু পড়ুয়াও। সেখানেই অধ্যক্ষের প্রতি অশালীন মন্তব্য করতে শোনা যায় টিএমসিপি নেতা আবেদকে। সৌম্যের দাবি, ‘‘কে, কী বলেছেন আমি শুনিনি।’’ তবে অধ্যক্ষ মানছেন, ‘‘শুক্রবার এই ঘটনা ঘটেছে।’’ কলেজ পরিচালন সমিতি বা অন্য কোনও মহলে অবশ্য অভিযোগ জানাননি তিনি। কেন? সুবিকাশের জবাব, “অভিযোগ জানিয়ে কী হবে! এ সব গা সওয়া হয়ে গিয়েছে।”

কলেজের টিএমসিপি-র ইউনিট সভাপতি নিমাই দাস আবার দাবি করেন, “অধ্যক্ষ সরাসরি আমাদের এবিভিপি করতে চাপ দিচ্ছিলেন। কলেজের ভবন নির্মাণ-সহ নানা ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে যে মামলা করেছি, তা তুলে নিতেও গালিগালাজ করছিলেন। শুধুমাত্র আমাদের সংগঠনকে কালিমালিপ্ত করতে ওই ভিডিয়োর কিছুটা অংশ কেটে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।”

Advertisement

টেন্ডার ছাড়াই এই কলেজের দোতলা ভবন নির্মাণ হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘুষ নিয়ে শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগও রয়েছে। তমলুকের সাংসদ তথা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই দিব্যেন্দু অধিকারী কলেজ পরিচালন কমিটির সভাপতি থাকাকালীন এই দুই অভিযোগ ওঠে। পরে তাঁকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। অভিযোগের তদন্ত শেষে রিপোর্টও জমা পড়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসকের কাছে। তবে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। এ নিয়ে গত বছর ২২ ফেব্রুয়ারি আবেদ-সহ কলেজের তিন ছাত্রনেতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে জনস্বার্থ মামলা করেছেন। আগামী সপ্তাহে তার শুনানি রয়েছে।

বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি অসীম মিশ্রের কটাক্ষ, ‘‘বাংলার শিক্ষা ব্যবস্থাকে কঙ্কালসার করে দিয়েছে এই শাসক দল। এ সব ঘটনা তারই প্রমাণ।’’ বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক তরুণ মাইতি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement