ফাইল চিত্র।
তীব্র গরম চলছিল। তারই মধ্যে চৈত্রের শেষ পর্বে যেন টুকরো টুকরো স্বস্তির বাতাস বইছে কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় দক্ষিণবঙ্গে! রোদের দাপট রয়েছে, কিন্তু থার্মোমিটারের পারদ বলছে, স্বাভাবিকের ঘর ঠেলে মহানগরে তার উত্থান তেমন হয়নি। বঙ্গের পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতেও চেনা গরমের ছবি আপাতত তেমন প্রকট নয়। কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় বঙ্গের একাংশে বুধবার মাঝেমধ্যে দমকা হাওয়ার দাক্ষিণ্যও পাওয়া গিয়েছে। আচমকা প্রকৃতিতে এমন ভেল্কিবাজি কেন, উঠছে প্রশ্ন।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস জানান, ঝাড়খণ্ডের উপরে একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। এ দিকে বঙ্গোপসাগর থেকে জোলো বাতাস ঢুকছে গাঙ্গেয় বঙ্গের পরিমণ্ডলে। জোলো বাতাসের ঠেলায় পশ্চিম দিক থেকে বয়ে আসা ‘লু’ বা গরম হাওয়া বাধা পাচ্ছে। তার ফলে গরমের জ্বলুনি কিছুটা হলেও কমেছে। গাঙ্গেয় বঙ্গের বায়ুমণ্ডলে চাপের তারতম্য রয়েছে। তার ফলে কিছু কিছু জায়গায় স্থানীয় ভাবে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে। দমকা হাওয়ার পিছনে সেই অস্থিরতাই আছে বলে জানান তিনি।
এপ্রিলের এই পর্বে বিকেল বা সন্ধ্যায় ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা বাড়ে। হাওয়া অফিসের অধিকর্তা জানান, আজ, বৃহস্পতিবার থেকে গাঙ্গেয় বঙ্গে ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। কাল, শুক্রবার বা পরশু, শনিবার ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি বলে জানান আবহাওয়া দফতরের বিজ্ঞানীরা। শনিবারেই (১০ এপ্রিল) রাজ্যে চতুর্থ দফায় পাঁচ জেলার ৪৪টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোট। রাজনৈতিক উত্তাপ যতই বাড়ুক, ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা থেকে আশা করা হচ্ছে, এই পর্বে প্রকৃতি অন্তত কিছুটা স্বস্তি দেবে। গত রবিবারেই মরসুমের প্রথম কালবৈশাখীর ছোঁয়া পেয়েছে মহানগর। সে-দিন কমবেশি ঝড়বৃষ্টি হয়েছিল গাঙ্গেয় বঙ্গের অন্যান্য জেলাতেও। তীব্র
গরম থেকে সাময়িক স্বস্তি দিয়েছিল সেই ঝড়বৃষ্টি।
সে-দিনের পর থেকেই গরমের মতিগতিতে কিছুটা বদল এসেছে। জোলো বাতাস ঢোকায় আকাশে হালকা মেঘ তৈরি হচ্ছে। তার ফলে দিনের তাপমাত্রা মারাত্মক ভাবে মাথাচাড়া দিতে পারছে না বলে জানান আবহবিদেরা। এ দিন বেলা আড়াইটেয় কলকাতার তাপমাত্রা ছিল ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দমদমে ৩৪.৮ ডিগ্রি। তীব্র গরমের জন্য বিখ্যাত শ্রীনিকেতনেও ভরদুপুরে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রির কাছেপিঠে ছিল বলেই জানিয়েছেন আবহবিদেরা।
তবে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বৃদ্ধি পাওয়ায় ঘাম বেড়েছে। তাতে পথেঘাটে বেরোনো মানুষজন নাকাল হয়েছেন। থার্মোমিটারের পারদ সামান্য নীচের দিকে থাকলেও চিকিৎসকদের পরামর্শ, এই গরমকে কোনও ভাবেই হেলাফেলা করা উচিত নয়। সুস্থ থাকতে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। সেই সঙ্গে ফ্রিজের ঠান্ডা পানীয় থেকেও যথাসম্ভব দূরে থাকতে বলছেন।