‘ভয় ও হতাশা থেকে আক্রমণ’, মমতাকে পাল্টা ওয়াইসির

গত কাল নাম না-করে ওয়াইসির বিরুদ্ধে বিজেপির কাছ থেকে টাকা নেওয়া, উগ্রপন্থায় মদতের অভিযোগ করেছিলেন মমতা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি ও উত্তর দিনাজপুর শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৯ ০৫:১০
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আক্রমণের জবাব চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই দিলেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের (এআইএমআইএম) প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি।

Advertisement

গত কাল নাম না-করে ওয়াইসির বিরুদ্ধে বিজেপির কাছ থেকে টাকা নেওয়া, উগ্রপন্থায় মদতের অভিযোগ করেছিলেন মমতা। আজ এআইএমআইএম প্রধানের পাল্টা, ভয় ও হতাশা থেকে তৃণমূলনেত্রী ওই ধরনের মন্তব্য করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের বিজেপির বাড়বাড়ন্ত নিয়েও মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করতে ছাড়েননি তিনি। উত্তর দিনাজপুরের তৃণমূল নেতারা অবশ্য ওয়াইসির বক্তব্যকে গুরুত্বই দিতে চাইছেন না।

কোচবিহারে এক কর্মিসভায় মমতা বলেছিলেন, “রাজনীতির মধ্যে দেখেছি হিন্দুদের মধ্যে উগ্রপন্থা আছে, কিছু সংখ্যালঘুদের মধ্যেও উগ্রপন্থা বেরিয়ে গিয়েছে। বিজেপির কাছে এরা টাকা নেয়, সে কথা মাথায় রাখবেন। হায়দরাবাদে তাঁদের বাড়ি।’’ নাম না-করলেও ‘হায়দরাবাদ’ বলে তৃণমূলনেত্রী যে ওয়াইসিকে নিশানা করেছেন তা বুঝতে কারও অসুবিধা হয়নি। আজ এআইএমআইএম প্রধান বলেন, ‘‘আমার দিকে অভিযোগের আঙুল তুলে বাংলার মুসলিমদের আপনি এই বার্তাই দিলেন যে ওয়াইসির দল বাংলায় শক্তিশালী হচ্ছে। এই ধরনের মন্তব্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভয় ও হতাশ ফুটে উঠছে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: উন্মুক্ত শৌচ মুক্তির দায়িত্বে ১০ আমলা

উগ্রপন্থা নিয়ে মমতার অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে বাংলার মুসলিমদের অবস্থার প্রসঙ্গ তোলেন ওয়াইসি। তাঁর কথায়, ‘‘বাংলায় সংখ্যালঘুদের যে উন্নয়ন হয়নি, তা বলা মোটেই ধর্মীয় কট্টরপন্থা, অসহিষ্ণুতা নয়। হায়দরাবাদের গোষ্ঠী নিয়ে দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) যদি এতই উদ্বিগ্ন, তা হলে পশ্চিমবঙ্গে ৪২টি আসনের মধ্যে ১৮টি বিজেপি জিতল কী ভাবে?’’

ওয়াইসির বক্তব্যকে উড়িয়ে দিয়ে উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের দাবি, ‘‘এই জেলায় কোনও প্রভাব ফেলতে পারবে না। ওদের কোনও সংগঠন নেই।’’ সম্প্রতি উত্তর দিনাজপুর লাগোয়া বিহারের কিসানগঞ্জ বিধানসভা উপনির্বাচনে জিতেছে ওয়াইসির দল। কিসানগঞ্জের লাগোয়া চাকুলিয়া, গোয়ালপোখর এবং ইসলামপুর বিধানসভা। এই চাকুলিয়া ফরওয়ার্ড ব্লকের দখলে। গোয়ালপোখর এবং ইসলামপুরে তৃণমূলের বিধায়ক। ইসলামপুরের বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘‘বাংলায় কোনও সাম্প্রদায়িক দলের জায়গায় নেই। বিজেপিকে ভোট দিয়ে মানুষ ভুল বুঝতে পেরেছেন। আর ভুল করবেন না।’’ গোয়ালপোখরের বিধায়ক তথা মন্ত্রী গোলাম রব্বানি মতে, এআইএমআইএম কোনও প্রভাব ফেলতে পারবে না।

লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে একটি আসনও ধরে রাখতে পারেনি তৃণমূল। বিজেপির জয়ের পরেই সেখানে রাজনৈতিক পরিবেশ পাল্টাতে শুরু করেছে। বিশেষ করে সংখ্যালঘু ভোট টানতে অনেক দলই তৎপর। এআইএমআইএম-ও সক্রিয়। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ওয়াইসির দল মেরুকরণের রাজনীতি করে উত্তর দিনাজপুরে সংখ্যালঘু ভোটে থাবা বসালে তৃণমূলের বিপদ। জেলা গোয়েন্দা সূত্রের খবর, উত্তর দিনাজপুরের এআইএমআইএম একটি মুসলিম যুব সংগঠনের মাধ্যমে প্রভাব বাড়াচ্ছে। ওই সংগঠনের সদস্যেরা ওয়াইসির সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। উত্তর দিনাজপুরে ওয়াইসির দল যে গোপনে সংগঠন বাড়াচ্ছে, সে সম্পর্কে আগেই সতর্কবার্তা পাঠিয়েছিল রাজ্য গোয়েন্দা দফতর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement