কলকাতায় কংগ্রেসের বৈঠকে এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক গুলাম আহমেদ মীর ও অন্যান্য নেতৃত্ব। বিধান ভবনে। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যে আগামী বিধানসভা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করার বার্তা প্রথম দিনেই ছিল। রাজ্যে কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের দ্বিতীয় দিনে ‘রোডম্যাপ’ তৈরি করে এগোনোর পরামর্শ দিলেন এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক ও বাংলার ভারপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক গুলাম আহমেদ মীর। দলের রাজ্য ও জেলা নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় তাঁর বার্তা, সব আসনে লড়াই করে শূন্য পাওয়ার চেয়ে কম আসনে প্রার্থী দিয়ে জয়ের সম্ভাবনা খোঁজা ভাল। তাঁর এই বক্তব্যে রাজ্যে কংগ্রেসের সামনে বামেদের সঙ্গে সমঝোতার রাস্তা খোলা থাকল বলেই মনে করা হচ্ছে।
এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক মীর এবং দুই সম্পাদক তথা সহ-পর্যবেক্ষক আসফ আলি খান ও অম্বা প্রসাদ বিধান ভবনে দু’দিনের বৈঠক সেরেছেন রাজ্য ও জেলা কংগ্রেস নেতৃত্বের সঙ্গে। জেলা সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠক ছিল শনিবার। প্রদেশ কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতৃত্ব, প্রাক্তন সাংসদ ও বিধায়ক এবং শাখা সংগঠনের নেতৃত্বের সঙ্গে রবিবার ছিল আলোচনা। সূত্রের খবর, বৈঠকে মীর বলেছেন, ভোটমুখী সংগঠন গড়তে হবে। বর্ষীয়ান নেতাদের মধ্যে কারা ভোটে প্রার্থী হতে চান, ঠিক করে নিতে হবে। মীরের মতে, রাজ্যের ২৯৪টি বিধানসভা আসনে লড়াই করে শূন্য পাওয়ার চেয়ে ৯০টি আসনে প্রার্থী দিয়ে ৯টিতে জিততে পারলেও দলের লাভ! সব দিক মাথায় রেখে ‘রোডম্যাপ’ নিয়ে এগোনোর কথা বলেছেন এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক।
এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক গুলাম আহমেদ মীর ও অন্যান্য নেতৃত্ব। —নিজস্ব চিত্র।
সদ্য ছয় বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে একাই লড়তে চেয়েছিলেন কংগ্রেসের জেলা নেতৃত্ব। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার এখনও পর্যন্ত সেই মতকে সমর্থন করেও সব দিক খোলা রেখে চলার কথা বলে এসেছেন। এআইসিসি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকেও জেলা নেতৃত্বের একাংশ একা চলার সওয়াল করেছেন। কংগ্রেস সূত্রের খবর, মীর তাঁদের কাছে জানতে চেয়েছেন, একা লড়ে জেলায় কতগুলি আসন তাঁরা জয়ের আশা রাখেন। অধিকাংশ সভাপতির উত্তরই ছিল নেতিবাচক। সেই সূত্র ধরেই মীর আসন বেছে লড়াইয়ের কথা বলেছেন। সূত্রের খবর, কংগ্রেসে সাংগঠনিক পুনর্বিন্যাসের জন্য কমিটি করে দেওয়ার কথাও ভাবা হয়েছে। বড় জেলাকে ভেঙে আলাদা সাংগঠনিক জেলা করা যেতে পারে।
বৈঠকের পরে মীর বলেছেন, ‘‘প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সব সদস্যকে নিয়ে শীঘ্রই একটি সম্মেলন করা হবে। দল ও সংগঠনের বিষয়ে সদস্যেরা সেখানে মতামত জানাবেন। নানা প্রতিকূলতার মধ্যে এই রাজ্যে কংগ্রেস কর্মীরা যে ভাবে লড়াই করছেন, তা প্রশংসনীয়।’’ বৈঠকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, জেলায় জেলায় দলের কর্মসূচি বাড়াতে হবে। প্রদেশ নেতৃত্ব যাবেন জেলায়।