কেউ এসেছেন প্রৌঢ় বাবাকে সঙ্গে নিয়ে, কেউ আবার সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন চাকরির যাবতীয় প্রমাণপত্র। তাঁরা সকলেই কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল। শুক্রবার সকালে কোনও রকম আভাস ছাড়াই হঠাত্ মিলেছে চাকরির মেয়াদ শেষের চিঠি। এরই প্রতিবাদে বেঙ্গল হেড কোয়ার্টার্সের সামনে কলকাতা পুলিশের প্রায় পাঁচশো জন কনস্টেবল এ দিন এক বিক্ষোভে জমায়েত হয়েছেন। এঁরা প্রত্যেকেই প্রাক্তন সেনাকর্মী।
বিক্ষোভকারীদের প্রশ্ন, প্রত্যেক কর্মচারীর নামে চিঠি না পাঠিয়ে কেন সার্বিক ভাবে নোটিসের মতো করে দেওয়া হল? চিঠিতে জানানো হয়েছে, চলতি মাসের পর নতুন করে কোনও চুক্তি করা হবে না ওই কর্মচারীদের। বিক্ষোভকারীদের বক্তব্য, এ ভাবে শুধু চিঠি দিয়েই চাকরির চুক্তির পুনর্নবীকরণ না করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে না সরকার। ২০১২ সালে রীতিমতো বিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রাক্তন সেনাকর্মীদের কলকাতা পুলিশের কনস্টেবলের পদে চাকরিতে নেওয়া হয়। এমনকী, পুলিশ ট্রেনিং স্কুলে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। আচমকাই একসঙ্গে পাঁচশো জনকে চাকরি থেকে সরানোর পিছনে ঠিক কারণ বুঝে উঠতে পারছেন না বিক্ষোভকারীরা কেউই। পরিবার এবং আগামী জীবনের দুশ্চিন্তায় পড়েছেন প্রাক্তন সেনাকর্মীদের সকলেই। গত মাস থেকে বেতন পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা।
বিক্ষোভকারীরা জানান, তাঁরা প্রশাসনের সর্বস্তরে লিখিত ভাবে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আর্জি জানাবেন। রাজ্য সৈনিক বোর্ড এবং জেনারেল অফিসার কমান্ডিং-এর সঙ্গেও কথা বলবেন বিক্ষোভকারীরা। প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল— সকলকেই আগামিকালের মধ্যেই আবেদন জানাবেন তাঁরা। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার দেবাশিস বড়াল জানান, ‘‘যখন তাঁদের চাকরিতে নেওয়া হয়, তখন কলকাতা পুলিশের প্রয়োজন ছিল। এই মুহূর্তে সে রকম প্রয়োজন নেই বলেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওঁদের চাকরি তো চুক্তিসাপেক্ষ ছিল।’’ কোথাও চুক্তি প্রতি বার নতুন করে করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়নি বলেও তিনি জানান। লালবাজারের অন্য এক কর্তা বলেন, ‘‘রাজ্য সৈনিক বোর্ড থেকেই ওঁদের চাকরিতে নেওয়া হয়, চুক্তি ঠিক হয়। এ বিষয়ে তাঁদের যা বক্তব্য তা রাজ্য সৈনিক বোর্ডকেই জানান।’’