মুর্শিদাবাদের অশান্ত অঞ্চলে জওয়ানদের রুটমার্চ। ছবি: পিটিআই।
ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরোধিতায় তেতে ওঠা মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতির খানিক উন্নতি হয়েছে। সোমবার নতুন করে গন্ডগোলের খবর মেলেনি জঙ্গিপুর, ধুলিয়ান বা সুতি থানা এলাকায়। তবে ওই এলাকাগুলিতে ইন্টারনেট পরিষেবা এখনও বন্ধ। পুলিশ সূত্রে খবর, আপাতত মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মুর্শিদাবাদের কয়েকটি এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সঙ্গে মালদহের দু’টি এবং বীরভূমের তিনটি ব্লকে ইন্টারনেট থাকবে না মঙ্গলবার পর্যন্ত। কারণ হিসাবে প্রশাসনের দাবি, উদ্ভূত গন্ডগোলের অন্যতম কারণ হল ‘গুজব’। সমাজমাধ্যম ব্যবহার করে যা দাবানলের মতো ছড়িয়ে অশান্তিতে উস্কানি দিচ্ছেন কিছু মানুষ। পুলিশের হুঁশিয়ারি, এঁদের কেউ পার পাবেন না। রাজ্যের এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ শামিমের কথায়, ‘‘পাতাল থেকেও খুঁজে বার করা হবে (অশান্তি পাকাচ্ছেন বা মদত দিচ্ছেন যাঁরা)।’’ শান্তি বজায় রেখে প্রতিবাদ করতে আবেদন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
সম্প্রতি দেশে বলবৎ হয়েছে ওয়াকফ সংশোধনী আইন। মুসলিম সমাজের একটি বড় অংশ ওই আইনের বিরোধিতায় পথে নেমেছে। বাংলাতেও জেলায় জেলায় বিক্ষোভ করছেন সংখ্যালঘুদের বড় অংশ। এই প্রেক্ষিতে কয়েক দিন আগে অশান্তি শুরু হয় মুর্শিদাবাদের সুতিতে। সেখানে বিক্ষোভকারীরা জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছিলেন। অবরোধ তুলতে গিয়ে হামলার মুখে পড়ে পুলিশ। প্রথম দিনের অশান্তিতে গাড়ি পোড়ানো হয় পুলিশের। সরকারি এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতি হয়। বিক্ষোভকারীদের একাংশের ‘ধ্বংসাত্মক’ মেজাজের জন্য পরিস্থিতি জটিল হয়। তার পর জঙ্গিপুর থেকে সুতি, ধুলিয়ান— মুর্শিদাবাদের জায়গায় জায়গায় অশান্তি শুরু হয়। বিক্ষোভকারীদের হটাতে গিয়ে বার বার সংঘর্ষের মুখোমুখি হয় পুলিশ। বাড়ি-দোকান ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, জাতীয় সড়ক ও রেলপথ অবরোধের পাশাপাশি পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে শুক্রবার থেকে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে মুর্শিদাবাদ। শনিবার বেলা বাড়তে আবার একই পরিস্থিতি। এ বার বোমাবাজির অভিযোগ ওঠে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি হাতের বাইরে যাচ্ছে দেখে চার রাউন্ড গুলি চালাতে হয় বলে জানায় পুলিশ। ঘটনাক্রমে গত শনিবার রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার এবং এডিজি (আইনশৃঙ্খলা) জাভেদ বার্তা দেন আন্দোলনকারীদের। একই সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের মনোভাবের সমালোচনা করেন তাঁরা। পাশাপাশি হুঁশিয়ারি দেন, প্রয়োজনে কঠোর হতে পিছপা হবে না পুলিশ। অন্য দিকে, ওই দিনই কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর মামলার প্রেক্ষিতে ওয়াকফ-উত্তপ্ত জায়গা (মূলত মুর্শিদাবাদের বিস্তীর্ণ এলাকা)-য় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দেয় বিশেষ বেঞ্চ। জানানো হয়, পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী যৌথ ভাবে অশান্ত এলাকাগুলিতে শান্তি প্রতিষ্ঠার কাজ করবে। সোমবার নতুন করে গন্ডগোলের খবর মেলেনি। সেই কথা জানিয়েছে রাজ্য পুলিশও।
ওয়াকফ-বিরোধী বিক্ষোভ, কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশ
জঙ্গিপুর মহকুমার সুতি, ধুলিয়ান, সামশেরগঞ্জের মতো এলাকায় রবিবার রাত থেকে নতুন করে আর অশান্তির খবর পাওয়া যায়নি। কেন্দ্রীয় বাহিনী স্পর্শকাতর এলাকায় রুটমার্চ করছে। গ্রামে গ্রামে টহল দিচ্ছে পুলিশও। যাঁরা অশান্তির আবহে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন, তাঁদের ঘরে ফেরানোর জন্য উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। জেলার বিস্তীর্ণ অংশে এখনও ইন্টারনেট পরিষেবা নেই। জারি রয়েছে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ১৬৩ ধারা। বেআইনি জমায়েতের অভিযোগে বেশ কিছু এলাকা থেকে রবিবার কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবার দিনভর মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকায় ঘোরেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব। তিনি জানান, পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার কথা বলে ‘গুজবে কান না দেওয়ার’ বার্তাও দিয়েছিলেন। কেউ কোনও সমস্যায় পড়লে অবিলম্বে পুলিশকে খবর দেওয়ার কথা বলা হয়।
ওয়াকফ-বিরোধী বিক্ষোভ, কেন্দ্রীয় বাহিনী ও পুলিশ
জঙ্গিপুর মহকুমার সুতি, ধুলিয়ান, সামশেরগঞ্জের মতো এলাকায় রবিবার রাত থেকে নতুন করে আর অশান্তির খবর পাওয়া যায়নি। কেন্দ্রীয় বাহিনী স্পর্শকাতর এলাকায় রুটমার্চ করছে। গ্রামে গ্রামে টহল দিচ্ছে পুলিশও। যাঁরা অশান্তির আবহে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন, তাঁদের ঘরে ফেরানোর জন্য উদ্যোগী হয়েছে প্রশাসন। জেলার বিস্তীর্ণ অংশে এখনও ইন্টারনেট পরিষেবা নেই। জারি রয়েছে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতার ১৬৩ ধারা। বেআইনি জমায়েতের অভিযোগে বেশ কিছু এলাকা থেকে রবিবার কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। রবিবার দিনভর মুর্শিদাবাদের বিভিন্ন এলাকায় ঘোরেন রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব। তিনি জানান, পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকার কথা বলে ‘গুজবে কান না দেওয়ার’ বার্তাও দিয়েছিলেন। কেউ কোনও সমস্যায় পড়লে অবিলম্বে পুলিশকে খবর দেওয়ার কথা বলা হয়।
মুর্শিদাবাদের অশান্ত এলাকাগুলির পরিস্থিতি কী?
রবিবার সকাল পর্যন্ত সামশেরগঞ্জ ও সুতি থানা এলাকা থেকে অন্তত ১৮০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার গ্রেফতারির সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। সুতি, ধুলিয়ান, সামশেরগঞ্জের একাধিক স্পর্শকাতর এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যেরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে আতঙ্কিত এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলছেন। বিএসএফের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাজ্য সরকার যত দিন চাইবে, তাঁরা তত দিন থাকবেন। সোমবার জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায় বলেন, ‘‘ধুলিয়ান থেকে বৈষ্ণবনগরের দিকে চলে যাওয়া ঘরছাড়া ১৭টি পরিবারকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে।’’ সোমবার বিএসএফের পূর্বাঞ্চলীয় এডিজি রবি গান্ধী মালদহে গিয়েছিলেন। তার পর আইজি (দক্ষিণবঙ্গ) সীমান্ত করণী সিংহ শেখাওয়াত এবং বিএসএফের কয়েক জন কর্তার সঙ্গে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ এবং সুতি থানার বেশ কিছু এলাকা ঘুরে দেখেন। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন তাঁরা। কথা বলেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির সঙ্গে। সকলকে নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হয়। মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) দীননারায়ণ ঘোষ বলেন, ‘‘উপদ্রুত এলাকাগুলি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিতে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’ বস্তুত, সামশেরগঞ্জ থানা এলাকা ছেড়ে যে পরিবারগুলো আতঙ্কে ঘর ছেড়েছিল, তার মধ্যে ৩২টি পরিবার ফের নিজেদের গ্রামে ফিরে এসেছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। পরিস্থিতির উন্নতি হলেও ঝুঁকি নিতে নারাজ প্রশাসন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর রুটমার্চ বেড়েছে। নিয়মিত টহলদারি ভ্যান যাচ্ছে প্রত্যেক এলাকায়। সমস্ত রকম জমায়েতের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।
মুর্শিদাবাদে অশান্তি নিয়ে যা বলছে পুলিশ
রাজ্য পুলিশের দাবি অনুযায়ী, গত ৩৬ ঘণ্টায় মুর্শিদাবাদে কোনও অশান্তির ঘটনা ঘটেনি। তেতে ওঠা এলাকাগুলি এখন শান্ত। কিন্তু তার মানে এটাও নয় যে, পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক। তবে স্বাভাবিকের দিকে এগোচ্ছে। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য পুলিশের এডিজি আইনশৃঙ্খলা জাভেদ ‘গুজব’ থেকে সাবধান করেছেন জনসাধারণকে। তাঁর দাবি, কোনও ঘটনা না-জেনে বাইরের রাজ্য থেকেও গুজব ছড়ানো হচ্ছে। গুজব বন্ধ করতেই উপদ্রুত এলাকাগুলিতে ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হচ্ছে। বস্তুত, গুজব ঠেকানোও পুলিশের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওই পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘শান্তি ফেরাতে স্থানীয়দের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাহিনীর রুটমার্চ চলছে। এলাকায় যাচ্ছেন উচ্চপদস্থ আইপিএস অফিসারেরা।’’ সেই সঙ্গে দোষীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার কথা জানিয়ে শামিম বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত গ্রেফতারির সংখ্যা ২০০ পার করে গিয়েছে। স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে কিছু এফআইআর হয়েছে। এর পরেও যাঁরা আমাদের কাছে আসবেন, তাদের এফআইআর গ্রহণ করা হবে। প্রথম দিন থেকে বলেছি, আজও বলছি, যাঁরা দোষী, দোষ করেছেন, কাউকে ছাড়া হবে না। তার জন্য যেখানে যেতে হয় যাব। পাতাল থেকে তাঁদের বার করব। তিনি যে-ই হোন না কেন, যত বড় ব্যক্তিই হোন না কেন, সবাইকে আইনের অধীনে আনা হবে এবং তাঁদের আইন মেনে শাস্তি দেওয়া হবে।’’
মু্র্শিদাবাদের পরিস্থিতি নিয়ে মামলা
মুর্শিদাবাদের পরিস্থিতি নিয়ে সোমবার একটি মামলা দায়ের হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। মামলাকারী পেশায় আইনজীবী, নাম শশাঙ্কশেখর ঝা। শীর্ষ আদালতের কাছে তাঁর আর্জি, বিশেষ দল গঠন করে সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে মুর্শিদাবাদের অশান্তির ঘটনার তদন্ত করা হোক। মুর্শিদাবাদে অশান্তিতে যে যে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, তার তদন্ত হওয়া জরুরি। তিনি বলেন, ‘‘ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে কিছু বলার থাকলে হাই কোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া যেতে পারত। মুর্শিদাবাদে যেটা হচ্ছে, অবিলম্বে তা বন্ধ হওয়া জরুরি। সুপ্রিম কোর্টকে আমি অনুরোধ করব যাতে দ্রুত বিষয়টিতে তারা হস্তক্ষেপ করে।’’
ওয়াকফ-বিরোধিতায় বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর
ওয়াকফ সংশোধনী আইন প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা আগেই বলেছিলেন, রাজ্যের সংখ্যালঘুদের অধিকার খর্ব হতে দেবেন না তিনি। ওয়াকফ সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে ‘গণতান্ত্রিক ভাবে আন্দোলন’-এর কথা বলেছেন তিনি। সোমবার মমতা সাবধান করেন, কেউ যেন প্ররোচনায় পা না দেন। কেউ যেন নিজের হাতে আইন না তুলে নেন। তিনি বলেন, ‘‘একটা জিনিস মাথায় রাখুন, কারও উপর কোনও আঘাত আসে, অবহেলিত হোক, শোষিতই হোক, সে বঞ্চিতই হোক, সে নির্যাতিতই হোক, সে কোনও ধর্মের লোকই হোক, আমরা কিন্তু সকলের পাশে দাঁড়াই।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘মানুষকে ভালবাসার চেয়ে বড় ধর্ম আর কিছুতে হতে পারে না। আমরা যখন জন্মাই তখন একাই আসি। আবার যখন চলে যাই, তখনও একাই চলে যেতে হয়। তাই কিসের লড়াই? কিসের দাঙ্গা? কিসের যুদ্ধ? কিসের অশান্তি? মনে রাখবেন মানুষকে ভালবাসলে সব কিছু জয় করা যায়। কিন্তু নিজেকে আলাদা করে রাখলে, বিচ্ছিন্ন করে রাখলে কাউকে জয় করা যায় না।’’ অন্য দিকে, পশ্চিমবঙ্গ সরকার চাইলে বিধানসভায় সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে আলোচনা হতে পারে এবং আইনের বিরোধিতায় প্রস্তাবও পাশ করানো যেতে পারে বলে জানিয়েছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। বস্তুত, ওয়াকফ বিল সংসদের দু’কক্ষে পাশ হওয়ার পর রাজ্যের মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করে বিধানসভায় ওয়াকফ আইন বিরোধী প্রস্তাব আনার দাবি জানান। ভাঙড়ের আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি মমতাকে চিঠি দিয়ে আবেদন করেছেন, বিধানসভায় ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনার জন্য।
ওয়াকফ বিরোধিতা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী
সংশোধিত ওয়াকফ আইন নিয়ে বিক্ষোভের নেপথ্যে বিরোধীদের হাত রয়েছে বলে দাবি বিজেপির। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অভিযোগ, ওয়াকফ আইনের বিরোধিতার পথে হেঁটে ভারতীয় সংবিধানের রূপকারের অবমাননা করেছে কংগ্রেস। বিআর অম্বেডকরের জন্মদিবসে হরিয়ানার হিসারে একটি বিমানবন্দরের উদ্বোধন করতে গিয়ে মোদী অভিযোগ করেন, অম্বেডকর ভারতীয় সংবিধানে সামাজিক ন্যায়বিচারের যে ভাবনাকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন, কংগ্রেস তার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। তার পরেই ওয়াকফ আইনের বিরোধিতার প্রসঙ্গ তুলে তাঁর খোঁচা, ‘‘কংগ্রেস এখন ভোটব্যাঙ্কের ভাইরাসে আক্রান্ত।’’
উল্লেখ্য, ওয়াকফ সংশোধনী বিল সংসদের দু’কক্ষেই পাশ হয়ে গিয়েছে। আইনও হয়েছে। তাই কোনও রাজ্য সরকারের পক্ষেই এখন আর এই তৈরি আইনের পরিবর্তনে কোনও পদক্ষেপ করা সম্ভব নয়। তবে রাজ্য সরকারগুলি চাইলে তা নিজ রাজ্যে কার্যকর না-ও করতে পারে। সঙ্গে সেই আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব এনে তা রাষ্ট্রপতির কাছেও পাঠাতে পারে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন, এ রাজ্যে সংশোধিত ওয়াকফ আইন কার্যকর করতে দেবেন না। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের ‘হস্তক্ষেপ’, সিএএ এবং এনআরসির বিরুদ্ধে এবং বিরোধী রাজ্য সরকারগুলির বিরুদ্ধে সিবিআই, ইডি অপব্যবহারের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ করিয়েছিল শাসকদল তৃণমূল। এ বারও কি সেই পথে হাঁটবে মমতার দল?