মিঠুন চক্রবর্তী। —ফাইল ছবি।
জোড়া এফআইআরের পর এ বার লিখিত অভিযোগ দায়ের হল অভিনেতা তথা রাজ্য বিজেপির কোর কমিটির সদস্য মিঠুন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার রাতে জোড়াসাঁকো থানায় স্থানীয় বাসিন্দাদের তরফে এই অভিযোগপত্রটি জমা দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, লিখিত অভিযোগ জমা নেওয়া হলেও, এখনও এফআইআর রুজু করা হয়নি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দলীয় কর্মসূচিতে ‘উস্কানিমূলক’ মন্তব্যের অভিযোগে প্রবীণ অভিনেতা মিঠুনের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
সম্প্রতি বিজেপির সদস্য সংগ্রহ অভিযানের সূচনা করতে কলকাতায় এসেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ২৭ অক্টোবর সল্টলেকের ইজেডসিসিতে সেই কর্মসূচি সংক্রান্ত এক অনুষ্ঠানে ছিলেন সদ্য দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা। লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর একটি ‘বিতর্কিত’ মন্তব্য করেন। বিজেপির সভায় হুমায়ুনের সেই বক্তব্য টেনেই মিঠুন বলেন, ‘‘আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনেই বলছি, যা করতে হয় সব করব। এই সব কিছুর মধ্যে অনেক অর্থ লুকিয়ে রয়েছে। আমাদের এখানকার এক নেতা বলেন, ৭০ শতাংশ মুসলিম, ৩০ শতাংশ হিন্দু। কেটে ভাগীরথীতে ভাসিয়ে দেব। ভাবলাম, মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে কিছু বলবেন। এমন কথা না বলতে বলবেন। কিছু হল না। আমি মুখ্যমন্ত্রী নই। কিন্তু বলে রাখছি, ভাগীরথী নদী আমাদের মা। তাই ভাগীরথীতে কেটে ভাসিয়ে দেব না। কিন্তু তোমার মাটিতেই তোমাকে পুঁতে দেব!’’
কোনও রাখঢাক না করেই প্রবীণ অভিনেতা আরও বলেছিলেন, ‘‘বার বার বলছি, যা করতে হয় সব। এমন সদস্য চাই, যাঁরা বুক চিতিয়ে বলবেন, মার! কত গুলি আছে দেখি! এমন কর্মী চাই না, যাঁরা টাকা নিয়ে কাজ করেন। এমন করলে আপনারা তৃণমূলে চলে যান। আমি বলে যাচ্ছি, আপনারা আমাদের বাগানের একটা ফল যদি ছেঁড়েন, আমরা চারটে ছিঁড়ব। এটা সত্যি। নইলে জিততে পারব না।’’ ভোটারদের মধ্যে হিন্দু-মুসলিম সংক্রান্ত মন্তব্য করে প্রবীণ অভিনেতা বলেছিলেন, ‘‘এটা অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী বলছে না। ১৯৬৮ সালের ২৮ বছর বয়সি মিঠুন বলছে। রাজনীতি করেছি। রক্তের রাজনীতি করেছি। সব জানি, কে কোথা থেকে কী করবে। আপনাদের পাশে চাই। সাহস চাই। বুক চিতিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।’’
মহাগুরুর এমন মন্তব্যে সমাজের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিঘ্নিত হতে পারে। এ কথা উল্লেখ করে জোড়াসাঁকো এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ মিঠুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন। ঘটনাচক্রে, সোমবার ওই বক্তৃতার বিরুদ্ধে বৌবাজার থানায় এক ব্যক্তি মিঠুনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেন। বিধাননগর দক্ষিণ থানাতেও তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে। যদিও, রুপোলি পর্দার ফাটাকেষ্টর বিরুদ্ধে আদৌ কোনও পদক্ষেপ হবে কি না, তা জানা যায়নি।