Bratya Basu on SSC Teachers' Protest

কেন গেলেন না বিকাশ ভবনে? অভিজিৎ-কথিত ‘রাজনীতি’ তুলেই প্রশ্ন ব্রাত্যের! শিক্ষামন্ত্রীর মুখে ‘সাপ-ওঝার পল্লিগীতি’ও

কসবায় বিক্ষোভরত শিক্ষকদের উপর পুলিশি লাঠিচার্জের প্রতিবাদে বুধবার বিকাশ ভবন যাননি অভিজিৎ। প্রকাশ্যে ছিঁড়েছেন মমতাকে লেখা চিঠিও। তবে শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, অভিজিতের না আসার নেপথ্যে রাজনৈতিক কারণ থাকতে পারে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৫ ১৭:০৫
Share:
(বাঁ দিকে) অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ব্রাত্য বসু (ডান দিকে)

(বাঁ দিকে) অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। ব্রাত্য বসু (ডান দিকে) — ফাইল চিত্র।

চাকরি বাতিলের রায়ের পর বার বার ‘রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠুন’ বলে আঙুল তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রীর দিকে। বুধবার সেই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় কথা দিয়েও বিকাশ ভবনে না-যাওয়ায় তাঁর সেই ‘রাজনীতি’ তাঁকে ফিরিয়ে দিলেন ব্রাত্য বসু। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা চিঠি দুপুর ২টোয় বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যকে পৌঁছে দেবেন বলেছিলেন বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন বিচারপতি। শেষ পর্যন্ত যাননি। এর পর অভিজিতের ‘অস্ত্র’ ব্যবহার করে তাঁকেই পাল্টা কটাক্ষ করেলেন ব্রাত্য। প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন, নিজে ‘রাজনীতির ঊর্ধ্বে’ উঠতে পারলেন না বলেই কি তড়িঘড়ি বাতিল করতে হল বিকাশ ভবনের বৈঠক?

Advertisement

কসবায় বিক্ষোভরত শিক্ষকদের উপর পুলিশি লাঠিচার্জের প্রতিবাদে বুধবার বিকাশ ভবন যাননি অভিজিৎ। প্রকাশ্যে ছিঁড়েছেন মমতাকে লেখা চিঠিও। অন্য দিকে, অভিজিৎ যে ব্রাত্যের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছেন না, তা বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রীর দফতরে আগেই জানিয়ে দেওয়া হয়। এর পরেই ব্রাত্য বলেন, ‘‘উনি নিজেই আমার কাছে মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠি জমা দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরে জানিয়েছেন, তিনি আসবেন না। কসবার ঘটনার প্রতিবাদে আসেননি, এটা কোনও যুক্তি হতে পারে না। শিক্ষা দফতর পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে কোনও ভাবে যুক্ত নয়। তা ছাড়া, এখানে এলেন না, কিন্তু এসএসসি দফতরে গেলেন? ওটাও তো সরকারি অফিস!’’ শিক্ষামন্ত্রীর আরও মত, অভিজিতের না আসার নেপথ্যে ভিন্ন কারণ থাকতে পারে। কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘‘উনি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিতে চাওয়ায় দলীয় রাজনীতিতে কোনও প্রতিবন্ধকতা তৈরি হল কি না, দল ওঁকে বারণ করল কি না, সে সব উনিই বলতে পারবেন!’’ ‘রাজনীতি’-অস্ত্রের পর অভিজিৎকে বিঁধতে পুরনো পল্লিগানও উদ্ধৃত করেছেন ব্রাত্য। তিনি বলেন, ‘‘আমার একটি কবিতা মনে পড়ছে— তুমি সর্প হয়ে দংশন করো, ওঝা হয়ে ঝাড়ো! ওঁর বিষয়টা খানিকটা সে রকম।’’

অন্য দিকে, ব্রাত্য জানিয়েছেন, চলতি সপ্তাহেই চাকরিহারাদের সঙ্গে ফের এক দফা বৈঠকে বসতে পারে রাজ্য। এসএসসি চেয়ারম্যান, বিভাগীয় সচিব থেকে শুরু করে শিক্ষা দফতরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরাও সেই বৈঠকে থাকবেন। সপ্তাহান্তে, শুক্র কিংবা শনিবার ওই বৈঠকের দিন স্থির করা হয়েছে। অথচ তার আগেই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে স্কুল পরিদর্শক (ডিআই)-এর দফতর অভিযানকে ঘিরে বুধবার সকাল থেকে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। সকালে কসবায় বিক্ষোভরত শিক্ষকদের উপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ব্রাত্য বলেন, ‘‘ওঁরা গিয়েছিলেন কেন? আন্দোলন করতে। সে দিন নেতাজি ইন্ডোরে মুখ্যমন্ত্রী বার্তা দেওয়ার পর চাকরিহারাদের নেতৃস্থানীয়দের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়েছিল। তাঁদের চাকরি কী ভাবে ফেরানো যায়, সে ব্যাপারে একটি সুরাহার পথ খুঁজে বার করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। শনিবার আবার বৈঠকে বসার কথা রয়েছে। তা হলে, সরকার সর্বতোভাবে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া সত্ত্বেও এখনই আন্দোলন, লড়াই, প্রতিবাদ কেন? আমরা তো যোগ্য বঞ্চিতদের পাশে আছি। একটু ধৈর্য ধরুন।’’

Advertisement

চাকরিহারাদের আশ্বাস দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, তাঁরা যা-ই করুন, তাঁদের রক্ষা করবে সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর কথামতো যোগ্যদের পাশে থাকার বার্তাও দিয়েছেন তিনি। চাকরিহারাদের বেতন নিয়েও ব্রাত্য জানিয়েছেন, শিক্ষকদের মাইনে সংক্রান্ত পোর্টাল আপডেট করা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত কোনও স্কুলে কোনও শিক্ষককে বাদ দেওয়া হয়নি। কোথাও বেতন বন্ধের কথা বলা হয়নি। বেতনের বিষয়ে রাজ্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে বলেও জানিয়েছেন ব্রাত্য। চাকরিহারাদের সঙ্গে দ্বিতীয় বৈঠকে জট খানিক কাটতে পারে বলে আশাবাদী একাংশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement