প্রতীকী ছবি।
ডিসেম্বর মাসে উপকূলে ঘূর্ণিঝড়ের ভ্রুকুটি। শেষ কবে এমন দৃশ্য দেখেছে বাংলায় উপকূল? আবহাওয়া দফতরের পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, ঠিক চার দশক আগে! ১৯৮১ সালের ডিসেম্বরের গোড়ায় বঙ্গোপসাগরে তৈরি ঘূর্ণিঝড় ‘থ্রিবি’ হানা দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গে। ৪০ বছর পর আসতে পারে আর এক ঘূর্ণিঝড়, ‘জওয়াদ’।
শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, ১৯৮১-র ৫ ডিসেম্বর ৬০ মাইল (প্রায় ৯৬ কিলোমিটার) গতিবেগে ধেয়ে আসা ‘থ্রিবি’ আঘাত হেনেছিল বাংলাদেশেও। স্থলভাগে আছড়ে পড়ার পর এক সময় তার গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৫ মাইলের (১৩৬ কিলোমিটার) কাছাকাছি হয়ে গিয়েছিল। দুই বাংলা মিলে সে বার প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রায় ২০০ জন। এ বার ‘জওয়াদ’ পশ্চিমবঙ্গের স্থলভাগে হানা দেবে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। অভিমুখ বদলে তা ওড়িশার দিকে চলে যেতে পারে বলেও মনে করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে প্রায় ১৩০ বছর পরে ওড়িশা উপকূলে ঘূর্ণিঝড়ের আবির্ভাব হবে বলে আবহাওয়া দফতরের পরিসংখ্যান জানাচ্ছে।
কিন্তু ‘জওয়াদের’ মতো ঘূর্ণিঝড় অভিমুখ বদলায় কেন? কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যাখ্যা, আবহমণ্ডলের উপরের স্তরের বায়ুপ্রবাহের অভিমুখ ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ নির্ধারণ করে। তার ফলেই ঘূর্ণিঝড়ের অভিমুখ বদলায়। উপকূলের খুব কাছে এসে এই ঘূর্ণিঝড়ের বাঁক নেওয়ার প্রবণতা অদ্ভুত মনে হতে পারে। তবে আবহবিজ্ঞানে এটা অস্বাভাবিক বা বিরল নয়।
আবহবিদদের অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে বঙ্গোপসাগরে ‘মাদি’ নামে একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছিল। সে উপকূলের কাছে এসে বায়ুমণ্ডলের উপরের স্তরের ধাক্কায় সমুদ্রে ফিরে বিলীন হয়ে যায়। ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’ এমন ভাবে বাঁক নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ছুঁয়ে বয়ে গিয়েছিল ওড়িশার দিকে। ২০১৯ সালে পথ বদল করেছিল ‘ফণী’ও।