গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে আলিপুরে সাংবাদিক সম্মেলনে জেলা শাসক সুমিত গুপ্তা।
গঙ্গাসাগর মেলায় নজরদারির জন্য এ বার ব্যবহার করা হবে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইসরো) ‘নেভিক’ (নেভিগেশন উইথ ইন্ডিয়ান কনস্টেলেশন) প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে মেলায় আসা পুণ্যার্থী, যানবাহন-সহ সব কিছুর উপর নজর রাখা হবে বলে বৃহস্পতিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে জানান দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত।
এ দিন আলিপুরে জেলাশাসকের দফতরে গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে আয়োজিত ওই সাংবাদিক সম্মেলনে জেলাশাসক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা সভাধিপতি নীলিমা মিস্ত্রি বিশাল-সহ বিভিন্ন দফতরের অতিরিক্ত জেলাশাসক এবং আধিকারিকেরা। করোনা মোকাবিলায় মেলায় আলাদা ব্যবস্থা থাকবে বলে জানান জেলাশাসক। কুয়াশা প্রতিরোধে এ বার থাকছে অতিরিক্ত ফগ লাইট।
প্রশাসন সূত্রের খবর, ইসরো-র তৈরি এই নেভিক প্রযুক্তি ৭টি উপগ্রহ ও গ্রাউন্ড স্টেশনগুলির একটি নেটওয়ার্ক। এ বার গঙ্গাসাগর মেলায় আসা সমস্ত জলযান এবং স্থলযানে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ‘ট্র্যাকার’ লাগানো হবে। ‘ট্র্যাকার’ লাগানো থাকবে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ এলাকাতেও। এই সব ‘ট্র্যাকার’-এর উপর নজরদারি চলবে প্রশাসনের তৈরি কন্ট্রোল-রুম থেকে। কোথাও কোনও সমস্যা দেখলেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মেলায় নজরদারির ক্ষেত্রে এত দিন সাধারণ নেভিগেশন ব্যবস্থার উপরই নির্ভর করতে হত। এ বার ‘নেভিকের’ মাধ্যমে নজরদারি আরও জোরদার হবে বলেই মনে করছে জেলা প্রশাসন। পাশাপাশি মেলার মাধ্যমে ভারতীয় এই নেভিগেশন ব্যবস্থা জনপ্রিয় হয়ে উঠবে বলেও মনে করছে প্রশাসন। এ ছাড়াও, মেলা ও সংলগ্ন এলাকা জুড়ে লাগানো হচ্ছে ১১৫০টি সিসি ক্যামেরা।মেলা উপলক্ষে ইতিমধ্যেই পুণ্যার্থী সমাগম শুরু হয়েছে গঙ্গাসাগরে। এ বার রেকর্ড ভিড হতে পারে বলে মনে করছে জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক জানান, ইতিমধ্যেই মুড়িগঙ্গা নদীতে একাধিক জায়গায় ড্রেজ়িংয়ের কাজ শেষ হয়েছে। কিছু জায়গায় ড্রেজ়িং বাকি রয়েছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তা শেষ করা হবে। তার জন্য নতুন ড্রেজ়ার আনা হচ্ছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, গত বছর কুয়াশার জন্য মেলায় বেশ কিছু ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। এ বছর সেই সমস্যা এড়াতে বিশেষ ধরনের ৯০টি ফগলাইটের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জেটিঘাট থেকে শুরু করে বিভিন্ন এলাকায় লাগানো হবে এই আলোগুলি। গত বছর মাঝনদীতে ভেসেল আটকে তীর্থযাত্রীরা সমস্যায় পড়েছিলেন। সেই সমস্যা এড়াতে এ বার ভেসেল, লঞ্চের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের আলাদা প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
এ বছর গঙ্গাসাগর মেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ‘কিউআর কোড’ও চালু করা হচ্ছে। এই ‘কিউআর কোড’ মোবাইলে স্ক্যান করে পুণ্যার্থীরা পানীয় জল, শৌচালয়, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বাস স্ট্যান্ড, জেটি ঘাট-সহ বিভিন্ন পরিষেবার ব্যাপারে তথ্য পেয়ে যাবেন। মেলায় করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী সব ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে বলেও জেলা প্রশাসন জানিয়েছে।