ফাইল ছবি
বড়দিনের সকালে বাঘের আতঙ্ক। তা-ও আবার পিকনিক স্পটে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলিতে পিয়ালি নদীর ধারে এ দিন বাতিল করে দেওয়া হয় পিকনিক। পর্যটকেরা হতাশ। অনেকে তল্পিতল্পা নিয়ে হাজির হয়েছিলেন শীতের সকালে।
বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শনিবার মেরিগঞ্জ ২ পঞ্চায়েতের ডোঙাঝড়া গ্রামের কাছে জঙ্গলে দেখা মিলেছে দক্ষিণরায়ের। দিন কয়েক আগে কুলতলি ব্লকেরই মৈপিঠের ভুবনেশ্বরীতে ঢুকে পড়েছিল বাঘ। সে বার তাকে দিনের দিনই খাঁচা পেতে ধরে বন দফতর।
এ বার দিন তিনেক ধরে নানা এলাকায় বাঘের অস্তিত্ব টের পাচ্ছেন মানুষজন। হুঙ্কার শোনা গিয়েছে। দেখা গিয়েছে পায়ের ছাপ। তবে খাঁচা পাতা হলেও ধরা পড়েনি সে। বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জ পঞ্চায়েতের গায়েনের চক-লাগোয়া জঙ্গলে একটি বাঘ দেখতে পান মৎস্যজীবীরা। খবর পেয়ে বনকর্মীরা এসে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরের দিন ভোরে গায়েনের চক থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে ৫ নম্বর গরানকাটিতে ফের দেখা পাওয়া যায় রয়্যাল বেঙ্গলের। বনকর্মীরা এসে গ্রাম-লাগোয়া জঙ্গল নাইলনের জাল দিয়ে ঘিরে ফেলেন। বাঘ ধরতে দু’টি খাঁচাও পাতা হয়।
শনিবার ভোরের আলো ফোটার আগে গরানকাটি থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে পিয়ালি নদীর ধারে কেল্লা-সংলগ্ন ডোঙাঝড়া গ্রামের কাছে বাঘের পায়ের ছাপ দেখেন স্থানীয় মানুষ। গর্জনও শোনা যায়। খবর পেয়ে ফের বাঘ ধরতে নামে বন দফতর। নদী-সংলগ্ন প্রায় ৬০০ মিটার এলাকা জালে ঘিরে ফেলা হয়। দফায় দফায় নদীতে টহল দেন বন দফতরের কর্তারা। ছাগলের টোপ দিয়ে খাঁচা পাতা হয়। তবে বাঘের দেখা মেলেনি।
নদীর ধারে কেল্লা এলাকায় শীতকালে প্রচুর মানুষ পিকনিক করতে আসেন। শনিবার বড়দিন উপলক্ষেও সকাল থেকে ভিড় জমতে থাকে। বাঘ বেরোনোর খবর আসতেই পুলিশের তরফে সমস্ত পিকনিক বাতিল করে দেওয়া হয়। হতাশ হয়ে ফিরে যান পর্যটকেরা। কেনাবেচা হয়নি ছোট ব্যবসায়ীদের।
কলকাতার এক পর্যটক অমিতাভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘নদীর ধারে রান্নাবান্না করে খাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে সব আর হল না। তবে বাঘের আতঙ্কে পিকনিক বাতিলের এমন অভিজ্ঞতা তো আর রোজ রোজ হয় না। এই গল্পটাই করতে হবে বাড়ি ফিরে।’’