রেজিনগরের কর্মিসভায় শুভেন্দু অধিকারী (ডান দিকে)।— নিজস্ব চিত্র
নিশানা এখন একটাই, অধীর চৌধুরী।
গত দেড় মাসে কান্দি থেকে ধুলিয়ান, কখনও ‘বেইমান’, কখনও ‘বিশ্বাসঘাতক’— প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর ‘গড়’-এ এসে ক্রমান্বয়ে তোপ দেগে চলেছেন তমলুকের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী।
রবিবার সেই তালিকায় নয়া সংযোজন, ‘‘অধীর আগে তরমুজের ভূমিকা পালন করতেন, এখন পুরোটাই লাল।’’ শুভেন্দুর পাল্টা তোপে কামান দেগে চলেছেন অধীরও। সেই তরজা সমানে চলেছে।
সেই ‘ধারাবাহিকতা’ বজায় রইল বেলডাঙার ভাবতার প্রস্তাবিত কলেজ মাঠের রবিবাসরীয় সভাতেও। বিধানসভার প্রস্তুতি হিসেবে বেলডাঙা বিধানসভা এলাকার কর্মীদের নিয়ে আয়োজিত কর্মিসভার আগোগোড়া লক্ষ্য-উপলক্ষ রইলেন অধীর। মুর্শিদাবাদের পর্যবেক্ষকের টিপ্পনি, ‘‘তৃণমূলের সাফল্যের খতিয়ান দেখে ভয় পেয়ে গিয়েছেন অধীর। সে কারণে বামেদের সঙ্গে প্রকাশ্যে জোট চাইছেন।’’
এ দিনের সভাস্থল বেলডাঙার পুরবোর্ড বা বিধানসভা দুইই রয়েছে কংগ্রেসের দখলে। সেই এলাকার কর্মিসভায় ‘রেকর্ড’ ভিড় হয়েছে বলে দাবি জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের। তাঁদের দাবি, কর্মিসভায় সাত হাজারেরও বেশি লোক হয়েছে। এই লোকবলে মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের উত্থান দেখছেন নেতারা। শুভেন্দুর অভিযোগ, ‘‘রেজিনগর, বেলডাঙার বিধায়কেরা এত দিন বিধানসভায় গিয়ে এলাকার উন্নয়নের কথা না তুলে গোলমাল করে কাজ ভেস্তে দিয়েছেন। উন্নয়নের দিকে ফিরেও তাকায়নি।’’
অধীর ‘গড়ে’ আগেই আঘাত হেনেছেন শুভেন্দু। কংগ্রেসের দখলে থাকা কান্দির পুরবোর্ড হাতছাড়া হওয়ার মুখে। দলবদলের জেরে বেড়েছে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের আসনসংখ্যাও। গ্রাম পঞ্চায়েত চার থেকে বেড়ে হয়েছে ১০০, পঞ্চায়েত সমিতি এক থেকে বেড়ে সাতটি। পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদে এক জনের পরিবর্তে সদস্য সংখ্যা এখন ১২। অচিরেই ‘বেলডাঙা পুরসভা তৃণমূলের দখলে আসবে’ বলছেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, ‘‘বেলডাঙার অনেক নেতা দলবদলের লাইনে রয়েছেন।’’ ভোটের আগে অধীর ‘গড়ে’র সবক’টি ইট তিনি খুলে ফেলবেন, প্রত্যয়ী গলায় ফের সে কথা বলেন শুভেন্দু।
এ দিন শুভেন্দু ভাবতার সভায় ওঠেন বেলা দু’টো নাগাদ। তখন মঞ্চে রয়েছেন মান্নান হোসেন, নাকাশিপাড়ায় বিধায়ক তৃণমূলের কল্লোল খাঁ, কালীগঞ্জের বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদ। সভায় উপস্থিত তৃণমূলের যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সৌমিক হোসেন বলেন, ‘‘জেলায় দীর্ঘ দিন কংগ্রেসের অধিপত্য থাকলেও কোনও দিনই কোনও উন্নয়ন হয়নি।’’ এ দিন অধীরকে একহাত নেন মান্নানও। জেলা তৃণমূলের সভাপতির তোপ, ‘‘অধীর ভাঁওতার রাজনীতি করেন। ভোটের প্রতিশ্রুতি বাস্তাবে রাখেন না।’’