প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দহন জ্বালা আরও বাড়িয়ে আজ, বৃহস্পতিবার এবং আগামিকাল, শুক্রবারও রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের পাঁচ জেলায় তাপপ্রবাহের পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া দফতর। পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পশ্চিম বর্ধমানে তীব্র তাপপ্রবাহও হতে পারে।
তাপপ্রবাহের সতর্কতা রয়েছে বাঁকুড়া ও ঝাড়গ্রামে। গাঙ্গেয় বঙ্গের একাধিক জেলায় আর্দ্র এবং উষ্ণ আবহাওয়া থাকতে পারে। বর্ষা কবে আসবে, তা নিয়ে কোনও নিশ্চিত পূর্বাভাসও দেয়নি হাওয়া অফিস। তারা জানিয়েছে, আজ, বৃহস্পতিবার ও কাল, শুক্রবার ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে দক্ষিণবঙ্গের একাধিক জেলায়।
এই আবহে বুধবার শিক্ষা দফতরের বিজ্ঞপ্তি, সরকারি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এবং সরকার পোষিত স্কুলগুলো তাদের নিজস্ব এলাকার আবহাওয়া অনুযায়ী স্কুলের সময় পরিবর্তন করতে পারবে। এ নিয়ম শুধু চলতি জুন মাসের জন্যই প্রযোজ্য। তবে, সকাল বা মর্নিং স্কুল চালু করলেও পড়ুয়াদের মিড-ডে মিলের পাত যেন পড়ে।
আবহবিদেরা জানিয়েছেন, শনি এবং রবিবার কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের বেশির ভাগ জেলাতেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। এ দিকে উত্তরবঙ্গ বৃষ্টির দাপটে রীতিমতো নাকাল হচ্ছে। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, আগামী রবিবার পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের পাহাড় এবং তরাইয়ের জেলাগুলিতে জোরালো বৃষ্টি চলবে। কোনও কোনও এলাকায় অতিপ্রবল বৃষ্টির সতর্কতা দিয়েছে হাওয়া অফিস। ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে দার্জিলিং, কালিম্পং এবং জলপাইগুড়িতে।
আবহবিদদের ব্যাখ্যা, উত্তরবঙ্গে বর্ষা আগেই ঢুকে পড়েছে। তার উপরে একটি অক্ষরেখাও হিমালয়ের পাদদেশের এলাকার উপর দিয়ে বিস্তৃত আছে। এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক ভাবেই পাহাড় এবং তরাইয়ের জেলাগুলিতে বর্ষা জোরালো হয়ে উঠেছে। উল্টো দিকে, দক্ষিণবঙ্গে নির্দিষ্ট দিন পেরিয়ে গেলেও বর্ষা ঢোকেনি। তার ফলে পশ্চিম দিক থেকে গরম বাতাস বা লু পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে ঢুকছে।
এ দিকে উত্তরপ্রদেশ এবং বাংলাদেশের উপরে পৃথক দু’টি ঘূর্ণাবর্ত থাকার ফলে বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্পও ঢুকছে। তার ফলে উপকূলীয় জেলাগুলিতে আর্দ্র এবং অস্বস্তিকর আবহাওয়া দেখা যাচ্ছে। জলীয় বাষ্পের ফলে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে ঝড়বৃষ্টিও হচ্ছে। এ দিনও পশ্চিমাঞ্চলের কিছু এলাকায় ঝড়বৃষ্টি হয়েছে বলে খবর।
অত্যধিক এই গরমে স্কুলের সময় পরিবর্তন করে সকালে স্কুল করতে চেয়ে বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষক আবেদন করেছিলেন। তবে বেশ কিছু স্কুলে একই ভবনে সকালে প্রাথমিক স্কুল, বেলা বাড়লে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ক্লাস চলে। সেখানে সমস্যা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
শিয়ালদহের টাকি বয়েজ় স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা স্বাগতা বসাক বলেন, “আমাদের প্রাথমিকের স্কুল সকালে শুরু হয়ে সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে শেষ হয়। সকাল ১১টায় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ক্লাস শুরু হয়। আমাদের পক্ষে স্কুলের সময় পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।” হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভ্রজিৎ দত্তের কথায়, “আমাদেরও সকালে প্রাথমিক স্কুল চলে। সময় পরিবর্তন করা সম্ভব নয়।” শুভ্রজিৎ জানান, কলকাতায় এমন কিছু স্কুল রয়েছে যেখানে একই ভবনে সকালে মেয়েদের স্কুল, দুপুরে ছেলেদের স্কুল চলে। সেখানেও সময় পরিবর্তন সম্ভব নয়।