(বাঁ দিকে) অভিযুক্ত মেয়ে ও মা। সেই ট্রলি ব্যাগ (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।
ট্রলি-কাণ্ডে ক্রমশ ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত মা ও মেয়ে জেরার মুখে স্বীকার করে নিয়েছেন যে, তাঁরা পিসিশাশুড়ির দেহ ট্রলিতে ভরে গঙ্গায় ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। আটক ওই দুই মহিলা ফাল্গুনী ঘোষ এবং আরতি ঘোষ মধ্যমগ্রামে ভাড়া থাকতেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। সম্পর্কে তাঁরা মা-মেয়ে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে, বৃদ্ধা পিসিশাশুড়িকে মধ্যমগ্রামেই খুন করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত আড়াই বছর ধরে মধ্যমগ্রাম পুরসভার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে বীরেশপল্লি এলাকায় ভাড়া থাকতেন ফাল্গুনী এবং আরতি। কয়েক দিন আগে এক বৃদ্ধাকে ভাড়াবাড়িতে ঢুকতে দেখেন স্থানীয়েরা। তবে তিনি যে সম্পর্কে ফাল্গুনীর পিসিশাশুড়ি, তা তাঁরা জানতেন না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
অভিযুক্ত মা ও মেয়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জানিয়েছেন স্থানীয়েরা। তাঁদের দাবি, রাতে প্রায়ই অচেনা লোকজন আসতেন ফাল্গুনী এবং আরতির ভাড়াবাড়িতে। এক প্রতিবেশীর কথায়, “কয়েক দিন আগে রাতে এক মহিলা ওই ভাড়াবাড়িতে যাচ্ছিলেন। মহিলাকে দেখে কয়েকটা কুকুর চেঁচাতে থাকে। আমি গিয়ে বাড়ি অবধি এগিয়ে দিয়ে আসি।” তবে মা ও মেয়ে যে এমন কাণ্ড বাধিয়েছেন, তা জানতেন না প্রতিবেশীরা। মঙ্গলবার সকালে ওই ভাড়াবাড়িতে পুলিশ গেলে স্থানীয়েরা ঘটনার কথা জানতে পারেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিবেশীদের সঙ্গে সদ্ভাব ছিল না মা ও মেয়ের। প্রায়ই ঝামেলা হত। এক বার এমনই একটি ঝামেলায় কাউন্সিলরকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল। তার পর থেকে পাড়ায় বিশেষ মিশতেন না দু’জন। তাঁদের আসল বাড়ি কোথায়, তা-ও জানেন না স্থানীয়েরা। তবে স্থানীয় সূত্রে পুলিশ জানতে পেরেছে, সোমবার সকালে একটি ট্রলি ব্যাগ নিয়ে দু’জনকে ভাড়াবাড়িতে ঢুকতে দেখেছিলেন কয়েক জন। বিকেলে মা আর মেয়ে বেরিয়ে যান।
দেহাংশ ভরা নীলরঙা ট্রলি ব্যাগ ঘিরে সোমবার সকালে সরগরম হয় কলকাতার কুমোরটুলি ঘাট চত্বর। দুই মহিলাকে গঙ্গার ধারে ট্রলি ব্যাগ নিয়ে ঘুরতে দেখে সন্দেহ হয় স্থানীয়দের। তারা চেপে ধরতেই সেই ট্রলি ব্যাগ থেকে বেরোয় দেহাংশ। তার পর মা ও মেয়েকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।