কমিটির গুরুত্ব অবশ্যই আছে। কিন্তু সংগঠন মানে শুধুই কমিটি নয়। দলের সাধারণ সদস্য থেকেও কমিউনিস্ট পার্টিতে কাজ করা যায় বলে পরামর্শ দিলেন বর্ষীয়ান নেতা বিমান বসু। তরুণ প্রজন্মের কর্মীদের মনোবল ধরে রাখতে নিজের জীবনের অভিজ্ঞতাও তুলে ধরলেন তিনি।
কার্ল মার্কসের জন্মের দ্বিশতবর্ষ উপলক্ষে প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে তিন দিনের আলোচনাচক্রের আয়োজন করেছিল সিপিএম। শেষ দিনে মার্ক্সীয় চিন্তাধারা ও সমসাময়িক সংগঠন সংক্রান্ত বিষয়ে বক্তা ছিলেন বিমানবাবু। দলীয় সূত্রের খবর, সেখানেই তিনি বলেন, নানা কমিটি থেকে বাদ পড়ে বা জায়গা না পেয়ে অনেকের মনে নানা ক্ষোভ-দুঃখ হচ্ছে। কিন্তু দলের কাজ করতে গেলে কোনও কমিটিতে ভাল জায়গা পাওয়া অপরিহার্য নয়। তিনি নিজেও দীর্ঘ দিন কোনও কমিটির সদস্য ছিলেন না। কাজের ইচ্ছা এবং সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি থাকলে সাধারণ সদস্য হিসাবে কমিউনিস্ট সংগঠনে কাজ করা যায় বলেই পলিটব্যুরোর এই প্রবীণ সদস্যের মত।
সাম্প্রতিক কালে অভিযোগের মুখে পড়ে এবং তদন্ত কমিশনের রায়ের জেরে রাজ্য কমিটি থেকে বাদ পড়তে চলেছিলেন সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই প্রকাশ্যে দলের নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন তিনি এবং প্রকাশ্যে দলকে ‘হেয়’ করার দায়ে তাঁকে বহিষ্কারও করা হয়। এক দিকে যেমন সেই উদাহরণ সামনে রয়েছে, তেমনই নতুন এরিয়া সাংগঠনিক কমিটি গঠন নিয়ে দলের মধ্যে ক্ষোভ, উষ্মা মাথাচাড়া দিয়েছে। ঋতব্রত-কাণ্ডের কোনও নামোল্লেখ না করলেও এরিয়া কমিটির প্রসঙ্গে জায়গা না পেয়ে হতাশ হয়ে না পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিমানবাবু।
সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য, সব জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও গণসংগঠনের নেতৃত্ব হাজির ছিলেন ওই আলোচনা-পর্বে। বিমানবাবুর বক্তৃতার পরে তাঁদের মধ্যে থেকে কেউ কেউ প্রশ্ন তোলেন, সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনায় দলে তরুণ প্রজন্মের কাজ করা কি কঠিন হয়ে যাচ্ছে না? তাঁদের কারও কারও বক্তব্য, এরিয়া কমিটিতে এলাকার ওজনদার নেতারা নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইছেন এবং যুব ও ছাত্র সংগঠনের উজ্জ্বল মুখের জায়গা সেখানে হচ্ছে না। বিমানবাবু অবশ্য তখনও বলেন, সকলেরই অসুবিধা হচ্ছে, এমন সরলীকরণ ঠিক নয়। কমিটি নিয়ে কিছু অসুবিধা আছে ঠিকই। কিন্তু সে সব অসুবিধা অতিক্রম করেও কাজ করা সম্ভব।