প্রতীকী ছবি।
বর্ষার আশা তো দূর অস্ত, দক্ষিণবঙ্গে ফের অস্বস্তি বাড়ার ইঙ্গিতই দিচ্ছে আলিপুর হাওয়া অফিস। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, আজ, রবিবার থেকে আকাশে মেঘ কমবে। ফলে রোদের তেজ বাড়বে, বাড়বে দিনের তাপমাত্রাও। বাতাসে এমনিতেই বাড়তি জলীয় বাষ্প রয়েছে। তার সঙ্গে তাপমাত্রা বাড়লে অস্বস্তি আরও বাড়বে বলেই জানাচ্ছেন তাঁরা।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রের পূর্বাভাস, আগামী কয়েক দিনে মহানগরের পারদ ১-২ ডিগ্রি বাড়তে পারে। কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি পৌঁছবে। বাঁকুড়া, পুরুলিয়ার মতো পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলিতে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির কোঠা পেরোতে পারে।
গত ক’দিনের মতো শনিবারও সকাল থেকেই দরদরিয়ে ঘামতে শুরু করেছিলেন মানুষজন। শরীরে ঘাম বসে যাওয়ায় বাড়ছে সর্দিকাশির প্রকোপও। এ দিন দুপুরে সল্টলেক থেকে এসি গাড়িতে চেপে শোভাবাজার মেট্রোয় এসেছিলেন এক যুবক। গাড়ি থেকে নামতেই ভ্যাপসা গরমের ধাক্কায় অস্থির হয়ে পড়েন তিনি। মাটির তলায় মেট্রো স্টেশনে দাঁড়িয়েও ঘামের অস্বস্তি এড়ানো যায়নি। অনেকেই ঠান্ডা পানীয়ে গলা ভিজিয়েছেন। যদিও চিকিৎসকদের সতর্কবার্তা, ঘামের অস্বস্তি কাটাতে ঠান্ডা পানীয় খাওয়া উচিত নয়। তাতে সর্দিকাশিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। অতিরিক্ত ঘামের জেরে ‘ডিহাইড্রেশন’ এড়াতে বেশি পরিমাণে জল এবং তরমুজ বা শসার মতো ফল খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা।
এমন অস্বস্তিকর আবহাওয়া কেন? আবহবিদেরা জানান, সাগর থেকে জোলো হাওয়া দক্ষিণবঙ্গের পরিমণ্ডলে ঢুকছে। তার ফলে বিহার, ঝাড়খণ্ডের গরম হাওয়া ঢুকে তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি করতে পারছে না। এমনকী, বাঁকুড়া, পুরুলিয়াতেও এ বছর তাপপ্রবাহ (সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে ৫ ডিগ্রি বেশি) হচ্ছে না।
কিন্তু জলীয় বাষ্প ভ্যাপসা গরম তৈরি করছে। মাঝরাতেও ঘেমেনেয়ে অস্থির হচ্ছেন লোকজন। পশ্চিমা়ঞ্চলে অবশ্য অল্পবিস্তর স্বস্তির ইঙ্গিত মিলছে। রেডার চিত্র বিশ্লেষণ করে আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, আর্দ্রতা ও তাপমাত্রার যুগলবন্দিতে ঝাড়খণ্ড লাগোয়া জেলাগুলির উপরে বজ্রগর্ভ মেঘপুঞ্জ তৈরি হচ্ছে। তা থেকে জেলাগুলিতে সন্ধের দিকে ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে। এ দিনও বীরভূম, মালদহ, মুর্শিদাবাদের কোথাও কোথাও ঝড়বৃষ্টি হয়েছে।
আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, এ দিন কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাঁকুড়া, আসানসোলের মতো এলাকায় দিনের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রির কাছাকাছি ছিল। সর্বোচ্চ এই তাপমাত্রা স্বাভাবিক বা তার থেকে বড় জোর এক ডিগ্রি বেশি। আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, গ্রীষ্মে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেশি থাকাটাই দস্তুর।