Rujira Banerjee

জিজ্ঞাসাবাদ শেষ, প্রায় চার ঘণ্টা পর ইডি দফতর ছেড়ে বাড়ির পথে অভিষেক-পত্নী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়

বৃহস্পতিবার বেলা ১২টা ৩০ মিনিট নাগাদ সিজিও কমপ্লেক্সে ইডির দফতরে পৌঁছেছিলেন রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় চার ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ইডির দফতর থেকে বেরিয়ে এলেন রুজিরা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২৩ ১৬:২৮
Share:

বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ইডির দফতর থেকে বেরিয়ে গেলেন রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। — নিজস্ব চিত্র।

জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডেকে পাঠিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ইডির দফতরে পৌঁছেছিলেন তিনি। প্রায় চার ঘণ্টা পরে বিকেল ৪টে ২০ নাগাদ ওই দফতর থেকে বেরোলেন রুজিরা। তবে বেরোনোর সময় তিনি কোনও মন্তব্য করেননি। যে ভাবে গাড়ি নিয়ে ঢুকেছিলেন বেলায়, সেই ভাবেই বেরিয়ে গেলেন বিকেলে।

Advertisement

রুজিরাকে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ ইডি সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হওয়ার জন্য নোটিস পাঠিয়েছিল। তিনি যদিও এসেছিলেন সাড়ে ১২টা নাগাদ। সকাল থেকেই কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় ঘিরে ফেলা হয়েছিল গোটা সিজিও কমপ্লেক্স। ইডি দফতরের বাইরে বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে রাখা হয়। সূত্রের খবর, রুজিরাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দিল্লি থেকে ইডির আধিকারিকেরা সিজিও কমপ্লেক্সে এসেছিলেন। তাঁদেরই এক জন পঙ্কজ কুমার। তাঁর সঙ্গে এসেছিলেন সহকারী অধিকর্তা পর্যায়ের এক কর্তাও। সূত্রের খবর, বেলা ১২টা ৫ মিনিট নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলে রুজিরা। সাড়ে ১২টা নাগাদ সিজিও কমপ্লেক্সে পৌঁছন তিনি। রুজিরা বেরোনোর সঙ্গে সঙ্গেই দিল্লি থেকে আসা ইডির ওই আধিকারিকেরাও সিজিও কমপ্লেক্স ছেড়ে বেরোন। রুজিরাকে বৃহস্পতিবার জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা আমার পারিবারিক ব্যাপার। দয়া করে এ বিষয়ে আমায় কিছু জিজ্ঞেস করবেন না। ও ভাল মেয়ে। প্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে এবং শান্ত মেয়ে। ও নিজে বলবে নিজের কথা।’’

সোমবার কলকাতা বিমানবন্দরে আটকানো হয়েছিল রুজিরাকে। দুবাইয়ের বিমান ধরার জন্য ওই দিন সকাল ৭টা নাগাদ দুই সন্তানকে নিয়ে কলকাতার বিমানবন্দরে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু বিমান ধরার আগেই অভিবাসন দফতরের কর্মীরা ‘বাধা’ দেন রুজিরাকে। বেশ কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করার পর বিমানবন্দর ছেড়ে বেরিয়ে যান অভিষেক-পত্নী।

Advertisement

সেই সময় রুজিরাকে আটকানোর প্রসঙ্গ টেনে এনে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘অমানবিকতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দাবি করেছিলেন, বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে তদন্তকারী সংস্থা ইডিকে আগে জানিয়েছিলেন রুজিরা। ইডির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি দেওয়া ছিল। যদি ও কখনও বাইরে যায়, তবে ইডিকে জানাবে। সেই অনুযায়ী ও ইডিকে জানিয়েছে অনেক দিন আগেই। তখন ইডি বলতে পারত ‘তুমি যেও না।’ কিন্তু বিমানবন্দরে গিয়ে নোটিস ধরানো হাতে, যে ৮ তারিখে তুমি এসো..., অমানবিক জিনিস চলছে।’’ সরব হয়েছিলেন অভিষেকও। জানিয়েছিলেন, তাঁর জনসংযোগ যাত্রায় বাধা দেওয়ার জন্যই এ সব করা হচ্ছে।

অভিবাসন দফতর সূত্রের খবর, ইডির একটি মামলায় রুজিরার নামে ‘লুক আউট’ নোটিস জারি হয়েছে। তাই তাঁর বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ রয়েছে বলে দাবি করে তারা। যদিও অভিষেকের ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, ইডির ওই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট অভিষেক এবং রুজিরাকে রক্ষাকবচ দিয়ে জানিয়েছিল, তাঁদের বিদেশযাত্রার ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই, তা সত্ত্বেও রুজিরাকে বিমানবন্দরে বাধা দেওয়ার বিরুদ্ধে অভিষেক আইনি পদক্ষেপ করতে পারেন বলেও জানা গিয়েছিল তৃণমূল সূত্রে। তবে এই প্রথম নয়, এর আগেও ইডির দফতরে হাজিরা দিয়েছেন রুজিরা।

গত বছর জুন মাসে শিশুপুত্রকে কোলে নিয়ে ইডি দফতরে গিয়েছিলেন তিনি। কয়লা পাচার মামলায় অভিষেক ও তাঁর স্ত্রী রুজিরাকে বেশ কয়েক দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে ইডি। অতীতে ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ও তাঁর স্ত্রীকে দিল্লিতেও তলব করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। সমন পেয়ে দিল্লিতে ইডির দফতরে হাজিরা দিয়েছিলেন অভিষেক। কিন্তু রাজধানীর ইডি দফতরে হাজিরা দেননি রুজিরা। পরিবর্তে কলকাতার ইডির দফতরে হাজিরা দেন অভিষেক-পত্নী।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement