Dhupguri By-Election

সিপিএমে ধূপগুড়ির ফল পর্যালোচনা, অভিষেকের মহকুমা-ম্যাজিক দেখেবুঝে হাত কামড়াচ্ছে আলিমুদ্দিন

ধূপগুড়ির মানুষের কয়েক বছর ধরে দাবি, ওই এলাকাকে পৃথক মহকুমা হিসাবে ঘোষণা করা হোক। উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে এই ধরনের বিষয়গুলি অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং রাজনৈতিক ভাবেও তাৎপর্যপূর্ণ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২৩:৩৪
Share:

(বাঁ দিক থেকে) রামচন্দ্র ডোম, মহম্মদ সেলিম ও সূর্যকান্ত মিশ্র। ছবি: ফেসবুক।

ধূপগুড়িতে বিধানসভা উপনির্বাচনে জামানত জব্দ হয়েছে সিপিএম প্রার্থীর। শোচনীয় ভাবে তৃতীয় হয়েছেন দলীয় প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র রায়। মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া দলের রাজ্য কমিটির বৈঠকে জলপাইগুড়ি জেলার নেতারা কার্যত মেনেই নিলেন, প্রচারের শেষ মুহূর্তে তৃণমূলের ‘সেনাপতি’ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যে পৃথক মহকুমা করার কথা ঘোষণা করেছিলেন, সেটাই নির্বাচনে ‘ম্যাজিক’-এর মতো কাজ করেছে। সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব স্পষ্টই বলেছেন, মহকুমা বিষয়টি যদি আগে থেকে ধরা যেত তা হলে এই অবস্থা হত না।

Advertisement

সিপিএম সূত্রে খবর, জলপাইগুড়ি জেলার সম্পাদক সলিল আচার্য রাজ্য কমিটির বৈঠকে আলোচনা করতে গিয়ে জানিয়েছেন, ধূপগুড়িকে পৃথক মহকুমা করার দাবিতে যদি দল আন্দোলন করত, ঘেরাও করে রাখত তা হলে তৃণমূল এই ঘোষণা করতে দু’বার ভাবত। সূত্রের খবর, আত্ম সমালোচনার সুরেই তিনি জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষের দাবি ও আবেগ নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলা উচিত ছিল, তার যে মেজাজ প্রয়োজন ছিল, তা করা যায়নি। তার ফলেই ‘তৃণমূল-বিজেপি বাইনারি’ ভাঙা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

ধূপগুড়ির মানুষের কয়েক বছর ধরে দাবি, ওই এলাকাকে পৃথক মহকুমা হিসাবে ঘোষণা করা হোক। রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, উত্তরবঙ্গের ক্ষেত্রে এই ধরনের বিষয়গুলি অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং রাজনৈতিক ভাবেও তাৎপর্যপূর্ণ। সে দিক থেকে অভিষেক যে ঘোষণা করে এসেছিলেন, অনেকের মতে তা কার্যত শেষবেলায় খেলা ঘুরিয়ে দিয়েছিল। গণনাকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে একই কথা বলেছিলেন বিজেপি প্রার্থী তাপসী রায়ও।

Advertisement

২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ধূপগুড়ি আসন জিতেছিল বিজেপি। বিধায়ক বিষ্ণুপদ রায়ের মৃত্যুর কারণে ওই কেন্দ্রে উপনির্বাচন করতে হয়। আড়াই বছরের মধ্যে সেই আসন বিজেপির থেকে ছিনিয়ে নেয় তৃণমূল। তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাপার, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ধূপগুড়িতে সিপিএম প্রার্থী যা ভোট পেয়েছিলেন, উপনির্বাচনে তার থেকে খুব একটা নড়চড় হয়নি। ৬৫১টি ভোট বেড়েছে সিপিএমের। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের অনেকের মতে, সিপিএমের চিন্তার কারণ অন্য। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই এলাকায় তাদের ভোট পৌঁছেছিল ১২ শতাংশের আশপাশে। সেটা আবার দু'মাসে নেমে এসেছে সাড়ে ছয় শতাংশে। সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব সাংগঠনিক দুর্বলতার কথা মেনেই নিয়েছেন।

অভিষেকের ঘোষণাকে প্রশাসনিক রূপ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, ধূপগুড়িকে মহকুমা করার বিষয়ে প্রশাসনিক স্তরে যা যা করার তা করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। স্পেন ও দুবাই সফর থেকে ফিরে তিনি বাকিটা দেখবেন। অনেকের মতে, সিপিএম এ বার টের পাচ্ছে শুধু সাম্রাজ্যবাদ আর পুঁজিবাদ বলে কিছু হবে না। স্থানীয় স্তরের সংগঠন ও আন্দোলনকে যদি মজবুত না করা যায় তাহলে সংসদীয় রাজনীতিতে জামানত রাখা মুশকিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement